সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তর-পূর্বে শান্তি ফেরাতে বড় পদক্ষেপ করল মোদি সরকার। বৃহস্পতিবার অসমের আটটি আদিবাসী ‘বিদ্রোহী’ সংগঠনের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করল রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উপস্থিতিতে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এদিন রাজধানী গুয়াহাটির শংকরদেব কলাক্ষেত্রে এক অনুষ্ঠানে এই ত্রিপাক্ষিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রায় দশ বছর আলোচনা প্রক্রিয়া চলার পর এদিন চুক্তি সই করে অসমের আটটি আদিবাসী ‘বিদ্রোহী’ সংগঠন। তাদের নাম হচ্ছে–বিরসা কমান্ডো ফোর্স (BCF), আদিবাসী পিপল’স আর্মি (APA), অল আদিবাসী ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (ANLA), আদিবাসী কোবরা মিলিটারি অফ আসাম (ACMA), সন্থালি টাইগার ফোর্স (STF)। চুক্তিতে সই করে এই সংগঠনগুলি ভেঙে তৈরি হওয়া আরও তিনটি সশস্ত্র দল। বলে রাখা ভাল, ২০১২ সাল থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তারা। বর্তমানে সরকারের নির্ধারিত শিবিরেই (designated camp) রয়েছে সংগঠনগুলির ক্যাডাররা।
[আরও পড়ুন: স্টেডিয়ামের পর এবার আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদির নামে মেডিক্যাল কলেজ]
এদিন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma) বলেন, “আমি নিশ্চিত এই চুক্তির ফলে অসমে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক নতুন যুগের সূচনা হবে।” সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই চুক্তি ঐতিহাসিক। এর ফলে আদিবাসী বিদ্রোহে অনেকটাই লাগাম টানতে সক্ষম হবে সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত জানুয়ারি মাসে দুই জঙ্গি সংগঠনের ২৪৬ জন ক্যাডার আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসে। এর আগে ২০২০ সালে বোড়ো জঙ্গিদের সঙ্গেও একটি ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে অসম ও কেন্দ্র সরকার।
বলে রাখা ভাল, আশির দশক থেকেই সন্ত্রাসবাদ তুঙ্গে পৌছয় অসমে। ‘ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম’ তথা ‘উলফা‘ (ULFA) জঙ্গিদের হাতে রক্তাক্ত হয় রাজ্য। প্রায় একই সময় পৃথক রাজ্যের সশস্ত্র লড়াই শুরু করে বোড়ো জঙ্গি সংগঠন। সমস্যা আরও বাড়িয়ে স্বায়ত্বশাসন ও প্রথক রাজ্যের দাবিতে সংঘাতের পথ বেছে নেয় অসমের আদিবাসী বা চা জনগোষ্ঠীর একাংশ। কিন্তু মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অসম অনেক শান্ত। আলোচনার টেবিলে ফিরে এসেছে উলফার একটি বড় অংশ। এবার আদিবাসী সংগঠনগুলিও শান্তির পথে ফিরেছে।