সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১০০ দিনের কাজ অর্থাৎ MGNREGS প্রকল্পকে বর্ণনা করেছিলেন,”বহু বছরের ভুলের মাশুল” হিসাবে। কটাক্ষ করেছিলেন, ১০০ দিনের কাজ মানে গর্ত খোঁড়ার কাজ। অথচ, করোনা মহামারীর সময়ে এবং লকডাউনে সার্বিকভাবে গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ডের মতো কাজ করেছে এই মহাত্মা গান্ধী গ্রামীণ রোজগার গ্যারান্টি স্কিম। করোনা মহামারীর (CoronaVirus) পর এর চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে, বছরের শুরুতে সরকার এই প্রকল্পের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছিল, তা নিঃশেষিত। যার ফলে এখন উভয় সংকটে পড়েছে মোদি সরকার।
আসলে, ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজের চাহিদা একরকম ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে করোনা মহামারীর প্রকোপ বাড়া এবং লকডাউন জারি হওয়ার পর এর চাহিদা হঠাত অনেকটা বেড়ে যায়। সাধারণ সময়ে গ্রামের বহু শ্রমিক শহরে বিভিন্ন কারখানা বা নির্মাণ ক্ষেত্রে শ্রমিকের কাজ করেন। কিন্তু লকডাউনে (Lock Down) এই ধরনের লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে গ্রামে ফিরে যেতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামে ফিরে ১০০ দিনের কাজ চাইছেন তারা।
[আরও পড়ুন: Petrol Diesel Price: দেশজুড়ে অসন্তোষ সত্ত্বেও পরপর পাঁচদিন বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম, নিরুত্তাপ কেন্দ্র]
যার ফলে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে অনেকটা বেড়ে যায় MGNREGS-এর চাহিদা। সরকারের প্রত্যাশা ছিল ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজের চাহিদা বেশি হলেও ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তা আগের মতোই থাকবে। সেই মতোই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। গত অর্থ বছরে চাহিদা মেটাতে সরকার MGNREGS খাতে বরাদ্দ করেছিল ১ লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সেখানে চলতি অর্থ বছরে সেই তুলনায় ৩৪ শতাংশ কম বরাদ্দ হয়। অঙ্কটা ৭৩ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: দেশের দৈনিক করোনা পরিসংখ্যানে খানিকটা স্বস্তি, বাংলা ও অসমকে সতর্ক করল কেন্দ্র]
কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর এই কাজের চাহিদা সেভাবে কমেনি। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে গোটা দেশে ২.৮৬ কোটি পরিবার একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ চেয়েছেন। এ মাসেও ২ কোটির বেশি পরিবারের কাজের চাহিদা মেটাতে হবে। যা ২০২০-২১ অর্থবর্ষের তুলনায় কম হলেও ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের তুলনায় অনেকটা বেশি। এদিকে সরকারের ভাঁড়ে মা ভবানী। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, ইতিমধ্যেই চলতি বছর এই খাতে খরচ হয়ে গিয়েছে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ বরাদ্দের থেকে খরচ বেশি। এখন এনডিএ (NDA) সরকার পড়েছে মহা অস্বস্তিতে। কেন্দ্রকে বাধ্য হয়েই এই প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সরকারের তরফে সেই আশ্বাসও মিলেছে। এই বাড়তি খরচের সঙ্গে জুটছে বিরোধীদের কটাক্ষও। যে ১০০ দিনের কাজকে এতদিন শ্লেষের চোখে দেখছিলেন প্রধানমন্ত্রী, বারবার প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে সেই গর্ত খোঁড়ার কাজই গ্রামীণ অর্থনীতির ত্রাতা।