সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই প্রথম নয়। এগরায় (Egra Blast) ভানু বাগের কারখানায় এর আগেও বার দুই বিস্ফোরণ ঘটেছে। ভানুর বেআইনি বাজি কারখানায় ১৯৯৫ সালে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। সে বার পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০০১ সালে ফের বিস্ফোরণ কেড়ে নেয় ভানুর নিজের ভাই-সহ তিন জনের প্রাণ। ওই বেআইনি বাজি কারখানা যে আসলে সাক্ষাৎ মৃত্যুফাঁদ, সেটা ভাল করেই জানতেন স্থানীয়রা। তবু কারখানায় শ্রমিক জোগাড় করতে অসুবিধা হত না কৃষ্ণপদ বাগের। কোন জাদুতে?
আসলে এগরার প্রান্তিক ওই এলাকার মানুষের দারিদ্রকে কাজে লাগাত ভানু বাগ। ওই এলাকার অধিকাংশ পরিবারই দিন-আনা দিন খাওয়া। শ্রমই তাঁদের জীবিকা নির্বাহের উপায়। স্থানীয় সূত্র বলছে, গ্রামের গরিব শ্রমিকদের কম সময়ে বেশি পারিশ্রমিকের লোভ দেখিয়ে, কখনও ভয় দেখিয়ে কখনও প্রতারণা করে ঋণের জালে জড়িয়ে নিজের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করাত ভানু বাগ। কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক গ্রামবাসীই নিশ্চিত রোজগারের শেষ আশাটাও হারিয়েছিলেন। সেই রোজগারহীন গ্রামবাসীদের সহজেই ফাঁদে ফেলতে পারতেন ভানু।
[আরও পড়ুন: ‘যে ধর্মই হিংসা ছড়াক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে’, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জোসেফের]
আসলে কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় রাজ্যের অন্য প্রান্তের মতো এগরাতেও বন্ধ ১০০ দিনের কাজ। কেউ জব কার্ড থাকা সত্ত্বেও কাজ পাননি। কেউ আবার বার বার আবেদন করার পরেও জব কার্ডটাই (Job Card) পাননি। এই ধরনের রোজগারহীন শ্রমিকদের টার্গেট করত ওই বেআইনি বাজি কারখানার মালিক। গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রের হিসাব বলছে স্রেফ এগরার ওই গ্রামেই প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ১০০ দিনের কাজ বাবদ বকেয়া। স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূলের শান্তিলতা দাস বলছেন, যতদিন টাকা এসেছে কাজ দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন মানছে দেড় বছর ওই এলাকায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কাজের সংকট দেখা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বাইরে চিকিৎসা করাতে হবে’, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদন অনুব্রতর]
তৃণমূল বলছে, ১০০ দিনের কাজ না পাওয়াটা ওই কারখানায় শ্রমিকদের কাজ করতে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই এই মৃত্যুমিছিলের দায় কেন্দ্রকেও নিতে হবে। তৃণমূলের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে টুইট করে বলা হয়েছে,”বিজেপির উদাসীনতা গরিব মানুষের প্রাণ কাড়ছে। কেন্দ্র ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করায় শ্রমিকদের বেআইনি কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হচ্ছে। আর কতদিন ভুগতে হবে গরিব মানুষকে।”