সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের সামরিক তোড়জোড় নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ভারত সীমান্তে। সীমান্তে যে মাত্রায় যুদ্ধ প্রস্তুতি শুরু করেছে লালফৌজ, তা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। বুধবার নয়াদিল্লিতে এসে এমনটাই বললেন মার্কিন সেনার প্যাসিফিক কমান্ডের প্রধান জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন।
মঙ্গলবার দু’দিনের সফরে ভারতে আসেন জেনারেল ফ্লিন। ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই ‘ড্রাগনে’র অভিসন্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মার্কিন সেনার প্যাসিফিক কমান্ডের প্রধান। তাঁর বক্তব্য, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল চিনের (China) আগ্রাসী ব্যবহার পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে। ভারত সীমান্তে চিনের সামরিক তোড়জোড় উদ্বেগজনক। বলে রাখা ভাল, লাদাখে চিনা আগ্রাসনের সঠিকভাবে মোকাবিলা করছে না মোদি সরকার বলে বারবার অভিযোগ জানাচ্ছে বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তো বলেইছেন যে চিনকে জমি ছেড়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এহেন পরিস্থিতিতে মার্কিন সেনানায়কের মন্তব্যে কেন্দ্রের উপর আরও চাপ বাড়ল।
[আরও পড়ুন: মাস্ক না পরলে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে যাত্রীদের, কোভিড বাড়তেই সতর্কতা DGCA-এর]
বলে রাখা ভাল, গালওয়ান উপত্যকায় (Galwan Valley ) ভারত ও চিনা জওয়ানদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পরও লাদাখে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়ে চলেছে লালফৌজ। মিলিটারি কমান্ডার স্তরের আলোচনা চললেও বদলায়নি পরিস্থিতি। আর গোটা বিষয়ের উপর নজর রয়েছে বিশ্বের। লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জেনারেল ফ্লিন বলেন, “আমার মনে হয় নিজের ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডে (লাদাখ-সহ গোটা ভারত সীমান্ত)) লালফৌজ যেভাবে সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করছে তা উদ্বেগজনক।”
উল্লেখ্য, লাদাখে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রায় তেরো দফা আলোচনা হওয়ায় পর প্রশ্ন হচ্ছে, লাদাখ সীমান্তে কি শান্তি ফিরবে? বিশ্লেষকদের মতে, কূটনৈতিক আলোচনায় সেনা প্রত্যাহারে মৌখিকভাবে চিন রাজি হলেও বাস্তবে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি লালফৌজ। বরং আকসাই চিন থেকে শুরু করে সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশের কামেং সেক্টরে দ্রুত সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছে তারা। তাই স্বাভাবিকভাবেই ভারতও ফৌজ সরাচ্ছে না। এহেন পরিস্থিতিতে কূটনীতিবিদের আলোচনায় যে শীঘ্রই দুই দেশের মধ্যে চলা সীমান্ত সংঘাত মিটে যাবে, তেমন আশা করার কোনও জোরাল কারণ বা যুক্তি নেই। এদিন বিশ্লেষকদের আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণ করলেন মার্কিন সেনাকর্তা।