সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশ-বিশ্বের মহিলাদের সুরক্ষার দাবিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর কলকাতার কনসার্ট পিছিয়ে দিয়েছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল। অস্থির শহরের বুকে অনুষ্ঠান করতে মন সায় দেয়নি গায়িকার। তবে ১৯ অক্টোবর তিলোত্তমায় এলেন, মঞ্চে উঠে গানের মাধ্যমেই সব 'তিলোত্তমা', 'অভয়া'দের হয়ে সরব হলেন শ্রেয়া। শুধু তাই নয়, শেষপাতে সেই গান গাওয়ার আগে বিশেষভাবে দর্শকদের অনুরোধও করেন, কেউ যেন হাততালি না দেন। সেই মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হতেই নেটপাড়ার একাংশ তাতে রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন। এবার সেই প্রেক্ষিতেই শ্রেয়ার হয়ে পালটা সরব হলেন কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)।
শনিবার রাতে নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়াম যখন প্রায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ, সেই সময়ে শ্রেয়া গান ধরলেন, "যত ইচ্ছের ভাঙা ডানা, যত গল্প নজরবন্দি / যত সন্ধের যাওয়া মানা, যত রাত্রির অভিসন্ধি / সব মিথ্যের আর ধন্দের, তাই রক্তের সোঁদা গন্ধে / শুধু পৌঁছে যাবে, ঘুচে যাবে, বেঁধে রাখা গণ্ডি / এ যে শরীরের চিৎকার, জাগে ভাঙনের শব্দে...।" আর জি কর ঘটনার পর গোটা দেশে ঘটে চলা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন গায়িকা। সেইসময়ও শ্রেয়ার কলকাতা কনসার্ট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে পাশে দাঁড়ান কুণাল ঘোষ। আর এবার যখন তিনি শহরে অনুষ্ঠান করতে এসে ফের নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কণ্ঠ চাড়লেন, তখনও শ্রেয়া ঘোষালের গানকে বাহবা জানিয়ে প্রশংসায় ভরালেন তৃণমূল নেতা।
শ্রেয়ার প্রতিবাদী গানকে কেন রাজনৈতিক রং মাখিয়ে 'অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহার করা হবে? আপত্তি তুলে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করলেন কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, "শ্রেয়ার গান যথাযথ। যাঁরা এটা নিয়ে রাজনীতি করতে নেমেছেন, তাঁরা মনে রাখুন, শ্রেয়া প্রথম দিন থেকে বলেছেন নারী নির্যাতনের সমস্যাটা গোটা দেশের, সমাজের। তিনি বাঙালি, কলকাতায় গেয়েছেন, ঠিক করেছেন, স্বাগত জানাই। শিল্পী তাঁর মানসিকতা আগে থেকেই বলেছেন। নিজেদের কুৎসার একতরফা লাইনে ব্যবহার করবেন না। এখানে গণতন্ত্র, শিল্পীর স্বাধীনতা আছে। গাইতে পারেন। অন্য রাজ্যে নেই।"
প্রসঙ্গত, আর জি কর আবহে বাংলার ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদী গান বাঁধায় অরিজিৎ সিংকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন, "মহারাষ্ট্র-বদলাপুর নিয়ে চুপ কেন?" তবে তার চব্বিশ ঘণ্টা পেরতে না পেরতেই বলিউডের বাঙালি গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের (Shreya Ghoshal) অবস্থানকে সাধুবাদ জানান তৃণমূল নেতা। কারণ গায়িকা গোটা বিশ্বের তথা দেশে প্রতিনিয়ত যেভাবে নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, সেই প্রসঙ্গ তুলে নিরাপত্তার দাবিতে সুর চড়িয়েছিলেন। এবার যখন শ্রেয়া ঘোষালের প্রতিবাদী গানকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা হচ্ছে, তখনও নিন্দুক-সমালোচকদের এককথায় চুপ করালেন কুণাল।