সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাস্তায় নমাজ পড়লেই কড়া শাস্তি। বাতিল হতে পারে পাসপোর্টও। রমজান মাস চলাকালীনই কড়া নির্দেশিকা জারি করল উত্তরপ্রদেশের মিরাট পুলিশ। এই নির্দেশ না মানলে কঠোর শাস্তির নিদানও দেওয়া হয়েছে। মিরাট পুলিশের এসপি আয়ুষ বিক্রম সিং বলছেন, বিনা অনুমতিতে রাস্তায় বসে নমাজ পড়লে পাসপোর্ট পর্যন্ত বাতিল করা হতে পারে। যোগীরাজ্যের পুলিশের হুঁশিয়ারিতে এবার পালটা প্রশ্ন ছুড়লেন মুনাওয়ার ফারুকী (Munawar Faruqui)।

বছর তিনেক আগে কমেডির নামে হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে চটুল রসিকতার জন্য শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছিল জনপ্রিয় এই কৌতুকশিল্পীর। সম্প্রতি আপত্তি ওঠে তাঁর 'হপ্তা ওয়াসুলি' কমেডি শো নিয়েও। এবার ইদের প্রাক্কালে রাস্তায় বসে নমাজ পড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় বেজায় চটলেন মুনাওয়ার। গত শুক্রবার, ২৮ মার্চ, মিরাটের এসপি আয়ুষ বিক্রম সিং সাফ বলছেন, ইদগাহ এবং মসজিদ ছাড়া কেউ কোথাও নমাজ পড়তে পারবেন না। কোনও অনুমতি ছাড়া রাস্তায় নমাজ পড়লে কঠোর শাস্তি পেতে হবে। পাসপোর্ট বা লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। আর একবার পাসপোর্ট বাতিল হলে নতুন করে পাসপোর্ট পেতে অনেক ঝক্কি পোয়াতে হবে। পুলিশের অনুমতি ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া যাবে না।
পুলিশ সূত্র বলছে, রমজান মাসে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে রাস্তা বন্ধ করে নমাজ পড়ছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। ফলে তীব্র যানজটের সৃ্ষ্টি হয়। অনেক সময় বিকল্প রাস্তা খুঁজে ঘুরপথে পৌঁছতে হয় গন্তব্যে। স্বাভাবিকভাবেই চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। ইদগাহ এবং মসজিদ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় এভাবে নমাজ পড়া নিয়ে মিরাট পুলিশের কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। সেটার ভিত্তিতেই ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এবার সেই প্রেক্ষিতেই মুনাওয়ার ফারুকী গর্জে উঠেছেন। কৌতুকশিল্পীর প্রশ্ন, "৩০ মিনিটের নমাজ পড়ার জন্য এই শাস্তি? এবার থেকে ভারতের রাস্তাঘাটে আর কোনও উৎসব উদযাপন করা হবে না তো?" এদিকে মুনাওয়ারের এহেন পোস্টের পরই সরগরম নেটপাড়া। জাত-ধর্ম নির্বিশেষে অনেকেই সমর্থন জানিয়েছেন তাঁকে।
ইতিমধ্যেই পুলিশের এই নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সংখ্যালঘুদের একাংশের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে অহেতুক সংখ্যালঘুদের হেনস্তার চেষ্টা করা হচ্ছে। আবার পালটা যুক্তিও আসছে। কারও কারও বক্তব্য, প্রার্থনার জন্য নির্ধারিত প্রার্থনাস্থল আছে। তাই সাধারণের অসুবিধা করে প্রার্থনা করা হলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করতেই পারে। এমন বিতর্কের আবহেই মুনাওয়ারের একটি পোস্ট ঘৃতাহূতির মতো কাজ করল।