সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত জানুয়ারি মাস থেকেই সংবাদের শিরোনামে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ। গোটা দেশের কাছে সেই ব্যক্তি সইফ আলি খানের বাড়ির 'আততায়ী' বলে পরিচিত হলেও নবাব খোদ তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেছিলেন, "বেচারা, ওর জীবন আরও বেশি বিপর্যস্ত।" জানা যায়, শরিফুল আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। অশান্ত পরিবেশে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন দুটো পয়সা রোজগারের জন্য। সিসিটিভি ফুটেজের ছবি দেখে তাঁর বাবা রুহুল আমিনও ওই একই দাবি করেছিলেন যে 'ছেলে নির্দোষ'। সম্প্রতি সেই শরিফুলই মুম্বই নিম্ন আদালতের কাছে জামিনের আবেদন জানান। তবে শরিফুলকে যাতে কোনওভাবেই জামিন দেওয়া না হয়, সেই আবেদন জানিয়ে এবার পালটা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে চার্জশিট জমা দিল বান্দ্রা পুলিশ।

হাজার পাতার সেই চার্জশিটে অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণ তুলে ধরেছে মুম্বই পুলিশ। পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে দেখানো ব্যক্তির সঙ্গে শরিফুলের মুখের গড়ন মিল, আঙুলের ছাপ, এমনকী ফরেন্সিক ল্যাবের ফলাফলও জুড়ে দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্রে। দিন কয়েক আগেই শরিফুলের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল পুলিশ। সেই সময়েই তাঁরা জানিয়েছিলেন, সইফের শরীরে গেঁথে থাকা ছুরির অর্ধেকাংশ উদ্ধার হয়েছে শরিফুলের ব্যাগ থেকে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশি হয়ে কেন ভারতে অবৈধভাবে বাস করছেন অভিযুক্ত? সেই বিষয়ের বিরোধিতাও করেছে মুম্বই পুলিশ। আদালতে সেপ্রসঙ্গ উত্থাপন করেই পুলিশের দাবি, অভিযুক্তের পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং তাই তাকে জামিন দেওয়া উচিত নয়। চার্জশিটে উল্লেখ, অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ করেছে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ এবং তার বিরুদ্ধে সমস্ত তথ্য-প্রমাণাদি রয়েছে।
অন্যদিকে মার্চের শেষের দিকেই আদালতের কাছে শরিফুল আবেদন জানান, তিনি কোনও অপরাধ করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে গোটা মামলাটাই মনগড়া। জামিন পেলে আদালতের নির্দেশ মাফিক চলবেন বলেও জানিয়েছিলেন শরিফুল। প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল, বাংলাদেশের নাগরিক শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সইফ আলি খানের হামলাকারী? বিশেষ করে তথাকথিত একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার পর থেকে রীতিমতো প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে হয়েছিল পুলিশকে। এবার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সমস্ত তথ্য, প্রমাণাদি-সহ চার্জশিট জমা দিল বান্দ্রা পুলিশ।