সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উৎসব আপনার। আনন্দ করতেই পারেন। কিন্তু এই আনন্দ যেন অন্য কারও নিরানন্দের কারণ না হয়। চারপেয়েদের যন্ত্রণা দেবেন না, বৃদ্ধ মানুষের অসুস্থতার কারণ হবেন না। পরিবেশের কথাও মাথায় রাখবেন। কালীপুজো, দীপাবলির আগে গুরুত্বপূর্ণ এই কথাগুলোই স্মরণ করিয়ে দিলেন অভিনেতা-পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়।
সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওতে তথাগত প্রথমেই সবাইকে কালীপুজো ও দীপাবলির শুভেচ্ছা জানান। প্রার্থনা করেন যেন দেবী কালী সকলের অন্তরের অন্ধকার ঘুচিয়ে আলোর দিশা দেখান। তারকা জানান, মানুষের চেয়ে চারগুণ বেশি শোনার ক্ষমতা রয়েছে কুকুরের। তা সে বাড়ির পোষ্য হোক বা রাস্তার 'পারিয়া'। বিড়ালের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিই পাঁচগুণ। ফলে শব্দবাজি ফাটিয়ে বা দুম করে আওয়াজ করে যাঁরা আনন্দ পান, তাঁরা এটা বুঝতে পারেন না যে অনেকের কাছেই এই শব্দ আনন্দ নয় বরং যন্ত্রণার।
অভিনেতা-পরিচালকের কথায়, "আপনার ওই একটা আওয়াজ করার আনন্দের জন্য একটা প্রাণ চলে যাচ্ছে। কুকুর, বিড়াল, পাখিরা আমাদের শুধুমাত্র নিরাপরাধ আনন্দ করার জন্য তারা কিন্তু মারা যাচ্ছে এবং এই সময়টাতে, দীপাবলি-কালীপুজোর সময়টাতে গোটা ভারতজুড়ে আইন রয়েছে ৬৫ ডেসিবেলের বেশি আওয়াজ করা যাবে না। কিন্তু ভারতবর্ষের আইন মানুষ আর কবেই বা মেনেছে? কারণ যাঁরা আইন তৈরি করেন তাঁরাও হয়তো ওই বাজি ফাটানোর আনন্দে মত্ত হয়ে যান।"
তথাগত জানান, ক্রিকেট ম্যাচ জিতলে বা ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর যেভাবে শব্দবাজি ফাটে তাতে তাঁর মনেই হয় না যে আইন রয়েছে। হ্যাঁ, কিছু কিছু জায়গায় মানুষ সচেতন হয়েছেন। কিন্তু দীপাবলি, কালীপুজো আসলেই শব্দদৈত্য তীব্র আকার ধারণ করে। এর থেকে বাড়ির পোষ্যদের পাশাপাশি পথকুকুরদেরও বাঁচানো দরকার। দরকার প্রতিবাদের। যেটা প্রত্যেক সচেতন মানুষের করা প্রয়োজন।
"এই পৃথিবীটা সবাইকে নিয়ে বাঁচার জন্য। আমাদের আনন্দের জন্য কিছু প্রাণী প্রাণ হারায়, সেটা কি কোনওভাবে কাম্য?", প্রশ্ন করেন তারকা। অনেক পাড়াতেই বৃদ্ধ মানুষজন থাকেন। তাঁদের হৃদযন্ত্র দুর্বল। শব্দবাজির আওয়াজে তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। এর প্রতিবাদ প্রয়োজন। সরাসরি কিছু না বলতে পারলে সোশাল মিডিয়ায় মানুষের অমানবিক দিক তুলে ধরার আর্জি জানান অভিনেতা। গাছের গায়েও নির্মমভাবে আলো লাগানোরও তীব্র বিরোধিতা করেন তথাগত। তিনি মনে করেন, যে মানুষ সচেতনভাবে অন্য কারও ক্ষতি করেন না তিনিই প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত।