shono
Advertisement

পেরুর ভয়ংকর রোগে দৃষ্টি হারাচ্ছেন কলকাতার আইনজীবী

এ রাজ্যে ও শহরের অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত, বলছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা। The post পেরুর ভয়ংকর রোগে দৃষ্টি হারাচ্ছেন কলকাতার আইনজীবী appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:44 AM Mar 05, 2019Updated: 08:44 AM Mar 05, 2019

গৌতম ব্রহ্ম: পেরুর প্যারন গ্রামের জিনগত রোগ অন্ধকার নামাল কলকাতার বুকেও।  দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর একটি পাহাড়ি গ্রাম প্যারান। ৫০ পার করলেই গ্রামবাসীদের চোখে নেমে আসে অন্ধকার। ক্রমশ চলে যেতে থাকে দৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত অন্ধত্ব। তখন একমাত্র লাঠিই ভরসা। বিশেষ করে গ্রামের পুরুষরা বেশি অন্ধত্বের শিকার। এই রোগ জন্মগত। নাম ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। পেরুর এই পাহাড়ি গ্রামের মানুষের মতোই অতি বিরল রেটিনার রোগে আক্রান্ত কলকাতার এক আইনজীবী। নাম অলোক মাইতি। বাড়ি বাঘাযতীন এলাকার চিত্তরঞ্জন কলোনিতে। বছর সাতচল্লিশের অলোকবাবুর জীবনও ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। ডাক্তাররা অসহায়। কারণ এখনও পর্যন্ত এই জিনগত রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। এক্ষেত্রে চোখের ‘পেরিফেরাল ভিশন’ নষ্ট হয়ে যায়।

Advertisement

[রাতের অন্ধকারে পুড়ছে বাইক-গাড়ি, নয়া আতঙ্ক উত্তর কলকাতায়]

পেরুর ওই গ্রামের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই অলোকবাবুর। আগেও কখনও ছিল না। তবুও অলোকবাবুর মতো কলকাতার অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত। এমনটাই জানালেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিমাদ্রি দত্ত। ছানি অপারেশন করাতে অলোকবাবু হিমাদ্রিবাবুর কাছে গিয়েছিলেন। তখনই হিমাদ্রিবাবু আবিষ্কার করেন, শুধু ছানির কারণে নয়, অলোকবাবুর দৃষ্টি চলে যাচ্ছে রেটিনার অদ্ভূত এক রোগে। হিমাদ্রিবাবু জানালেন, এই রোগ রেটিনাকে আস্তে আস্তে গিলে নেয়। রোগীর ‘ভিস্যুয়াল ফিল্ড’ ছোট হয়ে যায়। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে। পাশ দিয়ে কোনও যানবাহন এলে রোগী দেখতে পাবেন না। অলোকবাবুরও একই সমস্যা। বাড়ির বাইরে একা বেরতে পারেন না। সঙ্গে কাউকে নিতেই হয়। অলোকবাবু জানালেন, “জন্ম থেকে রোগটা বয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ জানতামই না আমি প্রতিবন্ধী। রাতে একা বেরতেই পারছি না। অথচ, সামনের জিনিস দেখতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না।” 

সম্প্রতি এনআরএস হাসপাতাল অলোকবাবুকে প্রতিবন্ধী শংসা পত্র দান করেছে। ৭৫ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে অলোকবাবুর চোখে। জানা গিয়েছে, প্যারনের ৭৫ শতাংশ মানুষ অন্ধত্বের শিকার। সাতটি পরিবার মিলে এই গ্রাম তৈরি করেছিল। যাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল এই রোগ। কয়েক বছর আগে একটি মাইন সংস্থা সোনা-রুপোর খোঁজে হাজির হয় প্যারনে। ডাক্তার আসা শুরু হয় ওই গ্রামে। তখনই ওই অন্ধ গ্রামের কথা বিশ্বের লোক জানতে পারে। শুরু হয় গবেষণা। জানা যায়, এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা থেকেই এই অন্ধত্ব তৈরি হয়। যেসব ‘মা-এর এই সমস্যা রয়েছে তাঁদের পুত্র সন্তান জন্ম নেয় অন্ধত্ব নিয়ে। এই গ্রামের মানুষদের সঙ্গে অন্য কোনও জায়গার মানুষের সম্পর্ক তৈরি হয় না। বিয়েও হয় নিজেদের গ্রামের মধ্যেই। হিমাদ্রিবাবু জানালেন, “এই রোগ অত্যন্ত বিরল। ১০ হাজারে এক জনের হয়। এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। কলকাতা তথা রাজ্যে অনেকের চোখেই ছোবল বসিয়েছে এই রোগ। তবে, অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নিয়ে রোগী অন্ধকারে।”

[ শিয়ালদহ স্টেশনে ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক! হাতনাতে ধরল আরপিএফ]

The post পেরুর ভয়ংকর রোগে দৃষ্টি হারাচ্ছেন কলকাতার আইনজীবী appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement