রাহুল রায়: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Abhijit Gangopadhyay) নিজের কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার এক মামলার শুনানি চলাকালীন একথা জানালেন খোদ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বিতর্কের মাঝে হাই কোর্টের বিচারপতির এহেন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সম্প্রতি উচ্চ আদালতে সবচেয়ে চর্চিত নাম বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষক নিয়োগ-সহ একাধিক মামলায় তাঁর নির্দেশেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI) তদন্ত করছে। এমনকী, বিপাকে পড়েছেন একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমন পরিস্থিতিতে বিচারপতির বিরুদ্ধে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন দুশো জন আইনজীবী। এমন পরিস্থিতিতে ফের বিস্ফোরক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: মালদহ ও বাসন্তী বিস্ফোরণের তদন্তভার পাবে NIA? সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রের হাতেই ছাড়ল হাই কোর্ট]
এদিন ভরা এজলাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নিউ সেক্রেটারিয়েটের অনুষ্ঠানের দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সামনাসামনি হয়েছিলাম। আরও বিচারপতি ছিলেন। সামনে আসতে আমি হাত জোড় করে বললাম, আমি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। উনি বললেন, ওহ, আপনিই অনেক-অনেক কিছু করছেন। আপনি আপনার মতো কাজ করুন।” বিচারপতির কথায়, “আমি বলি, কিছু কথা যদি বলতে পারতাম….। উনি বললেন, এখন তো সুযোগ নেই, আপনি ভাল করছেন, আপনি আপনার মতো চালিয়ে যান।”
এখানেই শেয নয়, বিচারপতি আরও বলেন, “আড়াই বছরে ৯৫টি রায় দিয়েছি। তার মধ্যে দেড় বছর আদালত বন্ধ ছিল। অনেক ঘরে অর্ডার পেন্ডিং থাকে। খোঁজ নিন।” আইনজীবীদের চিঠিতে শুনানির ভিডিওগ্রাফি নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল। এদিন সেই ইস্যুতে বিচারপতি বলেন, “ওইদিন ভিড়ের পিছন দিকে পেপারওয়েট নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই কারণে আমি সেদিন ভিডিও করতে বলেছি। জ্যাঠামশাই এসে বলে গেলেন, সেটাই শেষ কথা হয়ে গেল!”
[আরও পড়ুন: ছেলেকেও সামলাতে পারেন না, পুলিশকেও না! অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের]
বিচার্য মামলার তালিকা মেনে বিচারের কাজ হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগও নস্যাৎ করে তিনি জানান একা মহিলা আদালতে এসে যাতে বসে না থাকেন সেই চেষ্টা করি। বিচারপতির কথায়,” মামলা কোনটা আগে না পরে শুনব সেটা বাছাইয়ের এক্তিয়ার আমার আছে। আর সেটা করতে পারি।” পক্ষপাতিত্ব ইস্যুতে তিনি বলেন, “আমি না কি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে মাতামাতি করি। আমি দুর্নীতি পেলে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করি।” ক্ষোভ উগড়ে বিচারপতির সাফ কথা, “এরপরেও দালালরা সব বকে যাচ্ছে। আমি আদালত অবমাননার মামলা করব, ওই চিঠিতে যারা স্বাক্ষর করেছে।”