কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: চিকিৎসার ভুলে বারবার অপারেশন, মোটা অঙ্কের বিল ধরানো। বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে রোগীর পরিবারের এমনই নানা অভিযোগ ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বহরমপুরের (Baharampur) নার্সিংহোম চত্বর। রোগীর পরিবারের হাতে হেনস্তার শিকার হলেন মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (CMOH)। বিধায়কের সামনেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে। গন্ডগোলের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবি তুলেছেন তৃণমূলের সাংসদ ডাক্তার শান্তনু সেন।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার দুপুরে। বহরমপুরের বেসরকারি নার্সিংহোমের এক রোগীকে ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে অশান্তি শুরু করে রোগীর পরিবারের লোকজন। নার্সিংহোম চত্বরে থেকে সেই অশান্তির রেশ পৌঁছে যায় সিএমওএইচ অফিসে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে মারধর করা হয়। সিএমওএইচ সন্দীপ স্যান্যালকে তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) ও সভাধিপতির সামনেই হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পৌঁছে উদ্ধার করে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ স্যান্যালকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিহরপাড়া। তৃনমুল বিধায়ক নিয়মত শেখ ও মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস (রাজু ) বহরমপুর সিএমওএইচ অফিসে চিকিৎসার অভিযোগ নিয়ে দেখা করতে যান।
[আরও পড়ুন: অবশেষে সুখবর! ২২ হাজার শূন্যপদে স্কুল শিক্ষক নিয়োগের বাধা কাটল, অনুমোদন রাজ্যের]
বহরমপুর থানার বুটারডাঙা এলাকার বাসিন্দা গোলবাহার শেখ পেটে ব্যথা নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন মাস চারেক আগে। সেখানে তাঁর অ্যাপেনডিক্স (Apendix) অপারেশন করা হয়। কিছুদিন পরে তাঁর পেটে সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বহরমপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। সেখানে ফের তাঁর অপারেশন হয়। গোলবাহার শেখের পরিবারের অভিযোগ, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এসব অপারেশন বাবদ প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বিল দিয়েছে, যা তাঁদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে রোগীর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
[আরও পড়ুন: পাখির চোখ লোকসভা নির্বাচন, বাংলা-সহ ১০ রাজ্যের ষাটোর্ধ্ব ভোটার টানতে নজর বিজেপির]
এই সমস্ত অভিযোগ তুলে প্রচুর লোকজন সঙ্গে নিয়ে বহরমপুর সিএমওএইচ অফিসে যান হরিহরপাড়া বিধায়ক নিয়ামত শেখ। তাঁরা সিএমওএইচ সন্দীপ স্যান্যালের সঙ্গে কথা বলেন। সন্দীপ স্যান্যাল রোগী দেখতে নিচে নামলে বিধায়ক এবং জেলা সভাধিপতির সামনেই সিএমওইচ-কে মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। কোনওক্রমে উদ্ধার করা হয় সন্দীপবাবুকে। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন (Santanu Sen)। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবি তুলেছেন তিনি।