সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টাকার বিনিময়ে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলি। প্রচুর টাকার বিজ্ঞাপনের লোভ দেখিয়ে হিন্দুত্বের প্রচার চালানো হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেলগুলিতে। একটি স্টিং অপারেশন করে এমনটাই দাবি করছে কোবরা পোস্ট নামের একটি ওয়েবসাইট। মাস দুয়েক আগেই স্টিং অপারেশনের প্রথম অংশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছিল কোবরা পোস্ট। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে স্টিং অপারেশনের দ্বিতীয় অংশ। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় ২ ডজন বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম টাকার বিনিময়ে সাম্প্রদায়িক খবর করতে রাজি।
কোবরা পোস্টের দেখানো স্টিং অনুযায়ী ভারতের সর্ববৃহত তিনটি সংবাদমাধ্যম টাইমস গ্রুপ, জি নিউজ নেটওয়ার্ক, এবিপি নিউজ নেটওয়ার্ক কয়েকশো কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে সাম্প্রদায়িক খবর করতে রাজি হয়েছে। ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কোবরা পোস্টের সাংবাদিক পুষ্প শর্মা আরএসএস সদস্য সেজে একের পর এক বড় সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ আধিকারিকদের টাকার বিনিময়ে খবর করার প্রস্তাব দিচ্ছেন। আর বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমই সেই প্রস্তাবে রাজিও হচ্ছে। টাইমস নাও, জি নিউজ, এবিপি নিউজ, ইন্ডিয়া টুডে, নেটওয়ার্ক ১৮, স্টার ইন্ডিয়া-সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের শীর্ষকর্তারা কালো টাকার মাধ্যমেও ঘুষ নিতে রাজি হয়েছেন। কীভাবে কালো টাকার মাধ্যমে পাওয়া ঘুষের টাকা হিসেবের মধ্যে আনা যায় তাও বাতলে দিচ্ছেন চ্যানেলগুলির কর্তারাই। শুধু হিন্দুত্বের প্রচার নয়, ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে শাসকদলকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতেও রাজি হয়েছে ওই সংবাদমাধ্যমগুলি। রাজনৈতিক আলোচনা, এবং রাজনৈতিক খবরের ক্ষেত্রে গেরুয়া শিবির যাতে বাড়তি সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন অধিকাংশ নিউজ চ্যানেলের কর্তারা।
[পনেরো দিনে এক লক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে চার বছরের খতিয়ান শোনাবে বিজেপি]
যদিও, কোবরা পোস্টের এই স্টিংকে ভুয়ো বলে দাবি করছে সংবাদমাধ্যমগুলি। ইতিমধ্যেই ওয়েবসাইটটির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন ওই সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে করা স্টিংয়ের ভিডিও প্রকাশ্যে আনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দিল্লি হাই কোর্ট। তাই এই স্টিং অপারেশনের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিজেপি সাংসদ তথা অভিনেতা পরেশ রাওয়াল একটি টুইটে দাবি করেন, কোবরা পোস্ট নামের ওয়েবসাইটটি নিজেই ভুয়ো।
[আন্দামানে প্রবেশ বর্ষার, সময়ের আগেই আগমনের সম্ভাবনা বাংলায়]
নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, অর্থ এবং প্রভাব খাটিয়ে সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের পক্ষে করে নিচ্ছে বিজেপি-আরএসএস। টাকার বিনিময়ে একশ্রেণির সংবাদমাধ্যম বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে এমন দাবি ছিল রাজনৈতিক মহলের একাংশেরও। কোবরা পোস্টের স্টিং যদি সত্যি প্রমাণিত হয় তাহলে বিরোধীদের সেই দাবিতেই শিলমোহর পড়বে আর তা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক, মত রাজনৈতিক মহলের।