অর্ণব আইচ: ‘‘হস্টেলে থাকতে গেলে র্যাগিংয়ের শিকার হতেই হবে। প্রাণ যদি কারও যায়, সেটা তার ব্যাপার।’’ মঙ্গলবার আলিপুর আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এমন চরম অসংবেদনশীল মন্তব্য করলেন যাদবপুর কাণ্ডে ধৃত ছাত্র দীপশেখরের বাবা মধুসূদন দত্ত। র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে যাদবপুরের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রেক্ষিতে ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসাবে ধৃত ছাত্রের বাবার এই মন্তব্য ঘিরে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
যাদবপুরে মেন হস্টেলে নাবালক ছাত্র ‘খুন’-এর অভিযোগে ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী ও তার দুই অনুগামী ছাত্র মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্তকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ছেলের মুখোমুখি হতে এদিন বাঁকুড়ার বাসিন্দা দীপশেখরের মা সংগীতা ও বাবা মধুসূদন দত্ত এসেছিলেন আলিপুর আদালতে। ছেলেকে গাড়ি থেকে নামতে দেখেই সংগীতাদেবী তাকে ‘বাবু’ বলে চিৎকার করে ডাকতে শুরু করেন। ছেলে ঘটনার পর কিছু জানিয়েছিল কি না, সেই ব্যাপারে অবশ্য এদিন তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দীপশেখরের কাছ থেকে পুলিশ ইতিমধ্যেই একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে, যেখানে সে নিজেই র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিল বলে উল্লেখ করা রয়েছে।
[আরও পড়ুন: মিনিবাস ও অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষ, ডায়মন্ড হারবারে মৃত ২, আশঙ্কাজনক আরও ৫]
এই নিয়ে প্রশ্ন করতেই রীতিমতো মেজাজ হারিয়ে দীপশেখরের বাবা মধুসূদন দত্ত বলেন, ‘‘যারা হস্টেলে থাকে, তারা কি জানে না যে, র্যাগিং ছাড়া থাকা যায় না? হস্টেলে থাকতে গেলে র্যাগিংয়ের শিকার হতেই হবে। কেউ বলুক, না বলুক, তা আমরা জানি। এটা বন্ধ হওয়া উচিত, কিন্তু তা বন্ধ করবে কে?’’ কিন্তু তা বলে র্যাগিংয়ের জন্য একটি প্রাণ চলে যাবে? জবাবে একই মেজাজে মধুসূদন বলেন, ‘‘প্রাণ যদি কারও যায়, সেটা তার ব্যাপার।’’ র্যাগিংয়ের ধারা যোগ করা নিয়ে এক প্রশের উত্তরে তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশ পুলিশের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি।’’