রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কেউ গ্রাজুয়েশন করছে কলেজে। কারও আবার ছোট একটি দোকান রয়েছে। কিন্তু সব ছেড়ে এই কোভিড মহামারীতে (COVID-19) মানুষের পাশে থাকার ব্রত নিয়েছে সোমনাথ, প্রসেনজিৎ, অভি, সায়নরা। মধ্য হাওড়ার বুকে অসহায়-অসুস্থ মানুষদের বিপদের বন্ধু এখন তাঁরাই। কারও বাড়িতে অক্সিজেন (Oxygen) পৌঁছানো, ডাক্তার নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে করোনা আক্রান্তকে হাসপাতালে ভরতি বা কোনও পরিবারকে দুবেলা খাবার পৌঁছে দেওয়া, সবই করছেন তাঁরা।
সোমনাথ গৌতম, অমিতাভ পাছাল, অভি লাহিড়ী, প্রসেনজিৎ হাজরা, সায়ন গোলুই, কমল গোলুই-সহ জনা পনেরোর এই স্বেচ্ছাসেবক টিম। এমনকী, কেউ মারা গেলে তাঁকে শ্মশানে গিয়ে দাহ পর্যন্ত করে আসছে এই কোভিড যোদ্ধারা। ইছাপুরের বাসিন্দা দেবু মুখোপাধ্যায়, সেরিব্রাল রোগী। অক্সিজেনের মাত্রা হঠাৎ করেই নেমে যায়। ওই বৃদ্ধের ছেলে ফোন করেন এই কোভিড যোদ্ধাদের। রাত দেড়টার সময় অক্সিজেন ও চিকিৎসক নিয়ে হাজির তাঁরা। কোভিড পজিটিভ ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভরতির ব্যবস্থাও করে তাঁরাই। আবার কদমতলার বদন রায় লেনে ঘটেছিল এক মর্মান্তিক ঘটনা। ২৯ বছর বয়সী এক যুবতীর মৃত্যু হয়েছিল। যদিও ওই যুবতী কোভিড আক্রান্ত ছিলেন না। কিন্তু আতঙ্কে ওই যুবতীকে দাহ করার জন্য কেউ ছিলেন না। তখন এগিয়ে আসে সোমনাথ গৌতমের টিম। মৃতাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া, তাঁর মুখাগ্নি করা, এমনকী, ওই যুবতীর পারলৌকিক কাজকর্মও নিজেদের খরচেই করেছিলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: বিজেপি সমর্থকদের প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবোস! বিতর্কে জড়ালেন বর্ধমানের তৃণমূল নেতা]
এই সেবাদলের অন্যতম সদস্য সোমনাথ গৌতমের বক্তব্য, “এই পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোটাই আমাদের এখন একমাত্র কাজ। চব্বিশ ঘন্টাই আমরা সার্ভিস দিচ্ছি। শুধু চিকিৎসার ব্যবস্থাই নয়, কোভিড আক্রান্তের বাড়িতে বাজার দোকান করে দেওয়া, ওষুধ নিয়ে আসা, সবই আমরা করছি।” সোশ্যাল মিডিয়ায় হেল্পলাইন নম্বর দিয়ে, কখনওবা মানুষের মুখে মুখে প্রচারের মাধ্যমেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। মূলত মধ্য হাওড়া এলাকায় কাজ করলেও, শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাক পড়ছে এই কোভিড যোদ্ধাদের।