স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: সেরাম ইনস্টিটিউটের (Serum Institute) টিকা নিয়ে খুব অল্প হলেও কিছু মানুষের দেহে রক্ত জমাট বেঁধেছে। সোমবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এই কথা জানাল কেন্দ্র সরকারের এক কমিটি।
ব্রিটেন, জার্মানি, কানাডা-সহ বেশ কয়েকটি দেশে কোভিশিল্ড (Covishield) নেওয়ার পর প্রাপকদের দেহের টিকা নেওয়ার স্থান থেকে রক্ত বেরিয়ে যাওয়া অথবা শিরা বা ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসে। এর ফলে মারাও গিয়েছেন অনেকে। যারপরই বেশ কিছু দেশে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে কোভিশিল্ড দেওয়ার কাজ। আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া-সহ বেশ কিছু দেশে কোভিশিল্ডের উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। যদিও শুরু থেকেই ভারতের ক্ষেত্রে রক্ত বার হওয়া বা জমাট হয়ে যাওয়ার তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে টিকাপ্রস্তুতকারক সংস্থা। তবে এদিন কেন্দ্রের তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হল, তাতে স্বীকার করে নেওয়া হল যে, হাতে গোনা হলেও রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে চিকিৎসা করতে ‘অস্বীকার’, বেঘোরে মৃত্যু করোনা রোগীর]
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Ministry of Health) কাছে নিজেদের সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়েছে দ্য ন্যাশনাল অ্যাডভার্স ইভেন্ট ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন বা এনএইএফআই (NIFI) নামক কমিটি। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সোমবার কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮১ জন ভারতীয়কে টিকা দেওয়া হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৬ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার ৮১৯ জন নিয়েছেন কোভিশিল্ড, ৬৭ লাখ ৮৪ হাজার ৫৬২ জন কোভ্যাক্সিন। এঁদের মধ্যে শিরা বা ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া অর্থাৎ থ্রম্বোলিক হয়েছে মাত্র ২৬ জনের। প্রতি দশ লাখে যা দাঁড়ায় ০.৬১ জন। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা যথাক্রমে ১০ ও ৪। এদিন কেন্দ্রের তরফে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া প্রসঙ্গে সতর্কতামূলক এক নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রেকর্ড গড়ে দেশে একদিনে করোনাজয়ী ৪ লক্ষ ২২ হাজার, তুলনায় অনেক কম আক্রান্ত]
স্বাস্থ্যকর্মী ও টিকাকেন্দ্রের প্রত্যেককে বলা হয়েছে, তাঁরা যেন টিকা গ্রাহকদের এই বিষয়ে সচেতন করেন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে টিকা নেওয়ার কুড়ি দিনের মধ্যে যদি কারও শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, বুকে ব্যথা হয়, হাত বা কাফ মাসলে যদি ব্যথা হয় বা ফুলে যায়, টিকা দেওয়ার জায়গা ও তার আশপাশে যদি লাল রংয়ের র্যাশ বার হয়, বমি-সহ বা ছাড়া যদি পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় , এই ধরনের মোট ১২টি উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছে।