গোবিন্দ রায়: রানাঘাটের কামালপুরে ১১২ ফুটের দুর্গাপুজো নিয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। পুজো কমিটির অভিযোগ প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। সেই মামলার শুনানিতে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্য।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্গা তৈরি করে চমক দিতে চেয়েছিল রানাঘাটের অভিযান সংঘ। ইউনেস্কো ও গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডকে এই বিষয়টি জানানো হয়ে গিয়েছে বলে হাই কোর্টে জানিয়েছেন ক্লাবের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এও জানানো হয়েছে ঐ দুই সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়টিও ঠিক হয়ে গিয়েছে। এমনাবস্থায় অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
এই সওয়াল শুনে বিচারপতি ভট্টাচার্য জিজ্ঞাসা করেন বিদ্যুৎ দপ্তর, দমকল বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে? জবাবে বিকাশ জানান, '৫৫ বছর ধরে ওই পুজো কমিটি ঐ স্থানে পুজো করছে। এবারও বিদ্যুৎ ও দমকল বিভাগের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গত জানুয়ারি মাসে আবেদন জানানো হলেও তাঁদের তরফ থেরকে কোনও উত্তর আসেনি। ফের ৩ সেপ্টেম্বর জেলাশাসকের কাছে চিঠি দিয়ে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।'
তার পর রাজ্যের আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আদালত জানতে চায় জেলাশাসক দপ্তরের পক্ষ থেকে অনুমোদনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে কি? জবাবে রাজ্যের আইনজীবী জানান, '২০১৫ সালে দেশপ্রিয় পার্কের পুজোয় একইরকম ভাবে ১০০ ফুটের বড় দুর্গা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে পদপিষ্টের ঘটনায় সেই পুজো বন্ধ করতে বাধ্য হতে হয়। এখানেও যে জায়গায় পুজোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে তার প্রবেশ পথ অত্যন্ত সংকীর্ণ। মাত্র ১৪ ফুটের রাস্তা রয়েছে। ফলে প্রশাসন দেশপ্রিয় পার্কের মত ঘটনার আশঙ্কা করছে। দর্শকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রশাসনকে অনুমতি দিতে হয়। মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়। যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে কী হবে?'
তা শুনে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'প্রশাসনের আশঙ্কার বিষয়টি আদালত গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু সংগঠকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত সংগঠকদের জানানো আবশ্যিক কর্তব্য।' এর পরই বিচারপতির নির্দেশ, বৃহস্পতিবার বেলা ২টোর মধ্যে জেলাশাসককে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে সংগঠকদের জানাতে হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারই তার পর এই মামলার শুনানি করা হবে জানিয়েছেন বিচারপতি।