ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: উৎসবের মরশুমে আনন্দের ভরা স্রোতে স্বাস্থ্যবিধির বাঁধন ঢিলে হতেই পারে। পুজোর (Durga Puja) আমেজে গা ভাসাতে গিয়ে শিকেয় উঠতে পারে সামাজিক দূরত্ব। ফের জাঁকিয়ে বসতে পারে করোনা ভাইরাস। এই আশঙ্কা মাথায় রেখে অতিমারীর প্রকোপ ঠেকাতে সব জেলাকে সতর্ক করল রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। একইসঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে করা হল কিছু পদক্ষেপ। শুধুমাত্র পুজোর প্রস্তুতির জন্য সরকারের কোষাগার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ হবে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্তাদের।
দপ্তর সূত্রে খবর, করোনার (Coronavirus) প্রকোপ ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে আরও ৪৩৫টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা কেনার বরাত দেওয়া হবে কয়েক দিনের মধ্যেই। এখন এমন ৪১০টি যন্ত্র কাজ করছে বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে। আগামী দেড়মাস আরও বড় লড়াইয়ের প্রস্তুতি হিসাবে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি কোভিড হাসপাতালে ২৩৫টি আইসিইউ, এইচডিইউ বেড বাড়বে। পুজোয় করোনা প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্যের সমস্ত জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বুধবার বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী-সহ শীর্ষ আধিকারিকরা। পরে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “পুজোর সময় করোনার প্রকোপ বাড়বে। উৎসবে সামাজিক দূরত্ব কতটা মানা হবে, তাতে সন্দেহ আছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সরবরাহ যেমন বাড়ানো হবে, তেমন সিসিইউ, এইচডিইউ বাড়ানো হবে।”
[আরও পড়ুন: মণীশ খুনের ছক কষা হয়েছিল মাস তিনেক আগে! চাঞ্চল্যকর তথ্য CID’র হাতে]
স্বাস্থ্যদপ্তরের খবর, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, নৈহাটি, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কোভিড (Covid-19) হাসপাতালে এইচডিইউ, সিসিইউ বেডের সংখ্যা বাড়ছে। তার মধ্যে পুরুলিয়া রোটারি হাসপাতালে বেড বাড়ানোর পাশাপাশি দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ড করতে জন্য জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসত, হাবড়া ও বসিরহাট হাসপাতালে সিসিইউ এবং এইচডিইউ বেডের সংখ্যা বাড়ানো হবে। নৈহাটি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, বারুইপুর, কাকদ্বীপ-সহ বিভিন্ন এলাকার হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ড খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এখানকার হাসপাতালের চিকিৎসকদের কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ এবং বেলেঘাটা আইডিতে কোভিড প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে শীঘ্র। কয়েকদিনের মধ্যে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে বেড বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। সব জেলায় একজন মেডিক্যাল সুপারভাইজার, এবং একজন প্রোটোকল ক্লিনিক্যাল অফিসার নিয়োগ করা হবে। সব মিলিয়ে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় কোমর বেঁধে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাজ্য।