সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কে করোনার অন্যতম সম্ভাব্য ভ্যাকসিন অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরির ‘কোভিশিল্ড’ (Covidshield)। বর্তমানে ভারতে ভ্যাকসিনটির তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। কিন্তু সেই ট্রায়ালে অংশ নেওয়া চেন্নাইয়ের (Chennai) এক ব্যক্তির এবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, ভ্যাকসিন নেওয়ার দশদিন পর থেকেই মারাত্মক পার্শ্ব–প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাঁর শরীরে। একাধিক স্নায়ুঘটিত এবং মানসিক রোগও দেখা দিয়েছে। এমনকী বেশ কয়েকদিন স্থানীয় হাসপাতালের ICU’তেও ভরতি ছিলেন তিনি।
এরপরই অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রজেনেকার (Oxford-AstraZeneca) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (Serum Institute of India)–সহ ভ্যাকসিন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক সংস্থা এবং ব্যক্তিকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি অবিলম্বে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘এখনই বলা যাবে না করোনার উৎপত্তিস্থল চিন নয়’, WHO-এর গলায় উলটো সুর]
জানা গিয়েছে, গত ১ অক্টোবর ওই ব্যক্তিকে পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয়। এরপর প্রথম দশদিন কোনও কিছুই হয়নি। কিন্তু ১১ অক্টোবর থেকে আচমকাই শরীর খারাপ হতে শুরু করে দেয় তাঁর। প্রথমে মাথা যন্ত্রণা, বমি হতে থাকে। এরপরই আচমকা স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দেয়। হাত–পা কাঁপতে শুরু করে। সব কিছু ভুলে যেতে থাকেন। কাছের কাউকেই চিনতে পারছিলেন না। শেষপর্যন্ত তাঁকে আইসিইউ’তে ভরতি করতে হয়। এরপর ২৬ তারিখ তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। এরপরই সেরাম ইনস্টিটিউটকে চিঠি দিয়ে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।
সেরাম ইনস্টিটিউট বাদে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR), ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ভ্যাকসিন ট্রায়ালের চিফ ইনভেস্টিগেটিভ অফিসার, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনার ইনস্টিটিউট ল্যাবরেটরিসকেও নোটিসটি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওই ব্যক্তিকে যে সংস্থায় ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয়েছে, সেই শ্রী রামচন্দ্র হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সংস্থার এক কর্তাকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনার ভয়ে কাঁপছেন কিম জং, সংক্রমণ রুখতে ফের মানুষ খুন উত্তর কোরিয়ায়!]
ওই নোটিসে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনে ট্রায়ালের আগে যে তথ্য দেওয়া হয়েছিল তা ভুল। তাঁর মক্কেলকে নানান শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এখনও দীর্ঘদিন চিকিৎসা করাতে হবে। এই ক্ষতি অপূরণীয়। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে ক্ষতিপূরণের পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বন্ধ করতে হবে ভ্যাকসিনটির উৎপাদন এবং বণ্টন প্রক্রিয়াও। তবে তাঁদের দাবি না মানলে আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন ওই ব্যক্তির আইনজীবী।