সম্যক খান, মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে দীর্ঘ ১৩ বছর পর নিজেদের পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করে সেখানে লাল ঝাণ্ডা পুঁতল সিপিএম। গোয়ালতোড়ের জগারডাঙার ঘটনা অক্সিজেন জোগাচ্ছে কর্মী-সমর্থকদের। জেলা সিপিএম সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, “রাজ্যে ২০১১ সালের পালাবদলের পর বহু সিপিএম পার্টি অফিসের দখল নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। ওই দুই রাজনৈতিক দল গাঁটছড়া বেঁধে সিপিএমকে শেষ করতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সিপিএমের সাধারণ কর্মীরাই রুখে দাঁড়াচ্ছেন।”
বাঁকুড়া জেলার সীমান্তবর্তী গড়বেতা দুই নম্বর ব্লকের জগারডাঙা গ্রাম একসময় লালদূর্গ বলে পরিচিত ছিল। সুশান্তবাবুদের কথায়, ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার রাতেই গড়বেতার তিনটি ব্লকেই সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। পরিবর্তনের প্রথম দিনই জগারডাঙা পার্টি অফিসের অদূরে খুন করা হয় স্থানীয় জোনাল কমিটির সম্পাদক জীতেন নন্দীকে। আক্রমণ করা হয় জগারডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সিপিএম পার্টি অফিসে হামলা চালিয়ে দরজা, জানালা ভাঙচুর-সহ ফ্যান, আলমারি, চেয়ার, টেবিল লুট করা হয়। পুরো এলাকাজুড়ে তাণ্ডব চলে। জরিমানার নামে টাকা আদায়, মহিলাদের উপর নির্মম অত্যাচার, পুরুষহীন গ্রামগুলিতে চলে লুঠপাট। পরবর্তীকালে খুন হন সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য অজিত লোহার ও যুবনেতা অরূপ লোহার।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিকের ২টি মামলা থেকে সরলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, ‘সুপ্রিম’ নির্দেশ হাতে পেয়ে কাটল সংশয়]
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ওই পার্টি অফিসে তৃণমূলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এরাজ্যে ভাল ফল করতেই ওই পার্টি অফিসটির দখল নিয়ে নেয় বিজেপি। তারপর ফের ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর পার্টি অফিসটি চলে যায় তৃণমূলের দখলে। বারবার হাতবদল হতে থাকা সেই পার্টি অফিসটিই এবার পুনরুদ্ধার করল সিপিএম। গত বৃহস্পতিবার সেই পার্টি অফিসে দলের লাল ঝাণ্ডা উত্তোলন করেন প্রাক্তন শাখা সম্পাদক শামসুর মল্লিক, এরিয়া কমিটির সম্পাদক বিকাশ লোহাররা। জেলা সম্পাদক সুশান্তবাবু বলেছেন, “সন্ত্রাস বেশিদিন স্থায়ী হয় না। লালঝাণ্ডার তলায় থেকেই জঙ্গলমহল এলাকার সাধারন মানুষ তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন।”