রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সোশাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কম বয়সের ছবি পোস্ট করে লাগাতার কুমন্তব্য! কাঠগড়ায় সিপিএমেরই একাংশ। কিন্তু তাঁদের সেই 'কুকর্মে'র পাশে নেই দলই! বরং সোশাল মিডিয়ায় দলের বিপ্লবীদেরই পালটা দুষল আলিমুদ্দিন। এমনকী, আর জি কর আবহে ‘মেয়েদের লড়াই’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে রাজ্য সিপিএম। সেই পুস্তিকার ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় ‘পিতৃতান্ত্রিক’মন্তব্যের জন্য দলেরই একাংশকে সিপিএম নেতৃত্ব বার্তা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুস্তিকার ভূমিকায় লেখা হয়েছে, 'কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অদ্ভূত পোস্ট করে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীর কম বয়সের ছবি পোস্ট করে তাঁরা মন্তব্য করেন যে, এই ছবি যদি ঠিক সময়ে পাত্রপক্ষের হাতে যেত, তাহলে আজ রাজ্যের অবস্থা এরকম হত না। অর্থাৎ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যদি গৃহবধূ হয়েই থেকে যেতেন, যদি রাজনীতির ময়দানে না আসতেন।, তাহলে আজ রাজ্যের এরকম অবস্থা হত না।’ তার পরই লেখা হয়েছে, ‘এই মন্তব্যের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ থাকলেও এটি একটি অত্যন্ত জঘন্য পিতৃতান্ত্রিক বয়ান। একজন মহিলাকে রাজনীতির ময়দান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ঘরে আটকে রাখার পক্ষে নিজের অবস্থান ঘোষণা।’
রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, পুরুষতান্ত্রিকতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে নারীবাদের উপরই আক্রমণ বলে সিপিএম মনে করছে। তাই এর বিরোধিতা করা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে সক্রিয় দলের একাংশের প্রতি সিপিএমের এই বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সমালোচনা করতে গিয়ে সিপিএমের অনেক কর্মীই বিতর্কিত মন্তব্য করছে। ফলে পার্টির সেই অংশের প্রতি আলিমুদ্দিনের এই বার্তা নিয়ে দলের মধ্যেও আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সোশ্যাস মিডিয়ায় ‘বিপ্লবী’ দলের একাংশের কর্মীদের কাঠগড়ায় তুলে সিপিএম কি ‘পাপস্খালন’ করতে চেয়েছে? সিপিএমের প্রকাশিত পুস্তিকায় আরও লেখা হয়েছে, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা তো বিজেপিও করেছে, কিন্তু মতাদর্শগতভাবে পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা তাদের নেই। তা—ই মেয়েদের স্বাধিকারের পক্ষের লড়াই আসলে শুধুমাত্র শাসকদলের সমালোচনা ও বিরোধিতার থেকে অনেক বেশি প্রসারিত ও গভীর লড়াই। এটা এক মুহুর্তের জন্য ভুললে চলবে না।’ সিপিএমের প্রকাশিত এই পুস্তকে প্রকাশক হিসেবে নাম আছে রাজ্য নেতা সুখেন্দু পাণিগ্রাহীর।