বাঙালির পয়লা বৈশাখ মানেই নস্ট্যালজিয়া। পোশাক থেকে খাবার, আড্ডা থেকে হালখাতা, সবেতেই থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ। তবে আজকের বাঙালি কি ততটাই উন্মুখ থাকে নববর্ষ নিয়ে? অতীতের স্মৃতিচারণা এবং নববর্ষের পরিকল্পনা ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটালকে জানালেন প্রাক্তন ক্রিকেটার দীপ দাশগুপ্ত। শুনলেন আলাপন সাহা।

পয়লা বৈশাখ এলেই স্মৃতিমেদুর হয়ে উঠি। যদিও আমার ছোটবেলা কেটেছে দিল্লিতে। বেড়ে ওঠাও সেখানে। দিল্লিতে বেড়ে উঠলেও ঐতিহ্য ভুলিনি। ভুলিনি বাঙালিয়ানাও। তাই নববর্ষের দিনটা খুবই বিশেষ একটা দিন। দুর্গাপুজোয় যেমন নতুন জামা হত, পয়লা বৈশাখেও তার ব্যতিক্রম হত না। প্রত্যেক বাঙালিরই এই দিনটাকে ঘিরে নানান সুখস্মৃতি রয়েছে। আসলে দিনটার তাৎপর্য এমনই।
আমাদের সময় পরীক্ষা শেষ হত মার্চের শেষ বা এপ্রিলের শুরুতে। এরপর লম্বা একটা ছুটি। আর এই ছুটির মধ্যেই পয়লা বৈশাখ। দিল্লির গোটা বাঙালি সমাজ এদিন অন্যরকম মেজাজে থাকত। নতুন জামা পরে চুটিয়ে আনন্দ করতাম সকলে। খাওয়াদাওয়া, আড্ডা, হইহুল্লোড় কোনও কিছুই বাদ যেত না। সাবেকি বাঙালিয়ানার ছাপ থাকত সর্বত্র।
এখন তো সময়ের দাবি মেনে মোবাইলে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিই সকলে। কিন্তু সেই সময় তো আর মোবাইল ছিল না। দূরের আত্মীয়দের 'শুভ নববর্ষ' জানানোর একটাই মাধ্যম ছিল, চিঠি। দাদু-ঠাকুমাদের চিঠি লিখেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতাম। এভাবেই সোনালি অতীতকে ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে আমার ছোটবেলা।
দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে বিরাট সংখ্যক বাঙালি থাকেন। ওখানকার একটা মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি আসত। কেবল তাই নয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হত। এমনই ছিল আমার ছোটবেলার পয়লা বৈশাখ। আমি এখন ইংল্যান্ডে। তবে যেখানেই থাকি না কেন, আটপৌরে বাঙালির মতোই পয়লা বৈশাখ পালন করি। এখনও এই দিনটা এলে পরিবারের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনি। শিকড়ের টানকে কি অস্বীকার করা যায়? আরেকটা বিষয়, ১লা বৈশাখের পরের দিনই আমার স্ত্রীর জন্মদিন। তাই এই দু'টো দিন অন্য দিনের চেয়ে আলাদা কাটে আমাদের। শেষ ২৫ বছর ধরে এর হেরফের হয়নি।