অভিষেক চৌধুরী, কালনা: রাতের খাবার মুখে তুলতেই গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গিয়েছিল মস্তিষ্ক। সোমবার রাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় যুবকের। প্রাথমিক তদন্তে নেমে যুবককে চায়ের দোকানের কর্মী বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু তদন্ত খানিকটা এগোনোর পরই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে এল! জানা গেল, নিহত যুবক চায়ের দোকানের কর্মীর আড়ালে আসলে পাশের জেলার দাগি অপরাধী (Criminal)। তার বিরুদ্ধে চন্দননগর ও হুগলি পুলিশের কাছে অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। সেখান থেকে পালিয়ে কালনায় গা ঢাকা দিয়েছিল। সেই কারণেই চায়ের দোকানের কাজ নেওয়া। তবে কি পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ? তা খুঁজছে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) পুলিশ সুপার আমনদীপ তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, মৃতের নাম রাজা। তিনি হুগলির (Hooghly) চুঁচুড়ার বাসিন্দা। মাস দুয়েক আগে কালনার এই চায়ের দোকানে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। স্বপন মাজির ওই দোকানে সেখানে চা ও পানীয় জল-সহ অন্যান্য খাবার বিক্রি করতেন রাজা। সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু সোমবার রাতে দোকানের ভিতরে বসে খাওয়ার সময়ই তাঁর দিকে ধেয়ে এল গুলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেসময় বাইক নিয়ে একদল দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে গুলি চালায়। মনে করা হচ্ছে, একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক থেকে তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি (Shootout)করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটের পর জামিন পেলেন ‘তাজা নেতা’ আরাবুল, একগুচ্ছ শর্ত চাপাল হাই কোর্ট]
পরে তদন্ত এগোতে থাকলে পুলিশের হাতে একাধিক তথ্য আসে। জানা যায়, রাজা ওরফে মিলন সিংহর বাড়ি চুঁচুড়ার (Chinsura) রবীন্দ্রনগরে। সেখানে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এই তথ্য পেয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট ও হুগলি জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। তারা মিলন সিংহ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আদানপ্রদান করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এসপি (SP) আমনদীপ জানান, পুরনো কোনও শত্রুতার জেরে সোমবারের খুন নাকি নতুন করে কোনও অপরাধমূলক কাজে জড়ানোর ফলে এমন মর্মান্তিক পরিণতি, তা এখনও তদন্তসাপেক্ষ।
[আরও পড়ুন: বাতিল রাজ্যপালের চোপড়া সফর, শিলিগুড়িতে সাক্ষাতে নারাজ নির্যাতিতরা]
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে এসপি জানান, দুজন বাইকে করে এসে গুলি চালিয়েছে। তারা কারা, এখনও জানা যায়নি। কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি। যার দোকানে কাজ করত রাজা ওরফে মিলন, সেই স্বপন মাজিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সবমিলিয়ে, এই হত্যাকাণ্ডে (Murder) নিহতের পরিচয় জানার পর কিনারা করতে আরও তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ।