সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। তৃতীয় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী বেঞ্চ থেকেই যে নতুন লড়াই শুরু হবে তা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছে ইন্ডিয়া জোট। আর এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিন রাহুল গান্ধী এমনটাই চাইছে হাত শিবির। আজ শনিবার দিল্লিতে শুরু হয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। সেখানেই দলের রণকৌশল ও বিরোধী দলনেতার পদ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে খবর।
এদিনের বৈঠকে রয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল-প্রিয়াঙ্কা-সহ অন্যান্য দলীয় নেতারা। আগামিদিনের নানা কৌশল, রণনীতি নির্ধারণ করা হবে এই বৈঠকে। তাহলে কি লোকসভায় বিরোধী দলনেতার আসনে দেখা যাবে রাহুলকে? এই প্রশ্নের জবাবে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা বীরাপ্পা মইলি অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "অবশ্যই! মানুষ রাহুল গান্ধীকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে দেখতে চাইছে। কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোট রাহুলকে চাইছে। মোদি এখন আর গ্রেট নন। তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে আগামিদিনে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াবে।"
এই অষ্টাদশ নির্বাচনে কংগ্রেসের রেজাল্ট নিয়েও বিশ্লেষণ হচ্ছে বৈঠকে। এইবারের নির্বাচনে ওয়ানাড় ও রায়বারেলি দুটি কেন্দ্র থেকেই জয়লাভ করেছেন সোনিয়াতনয়। তাঁর কাছে ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। এদিন বৈঠক শুরু হওয়ার আগে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তথা তামিলনাড়ুর সাংসদ মানিকম ঠাকুর বলেন, "এই বৈঠকে আমরা কংগ্রেসের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করব। যে যে জায়গায় খামতি রয়েছে সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। আমরা সকলেই চাই রাহুল গান্ধীকে বিরোধী দলনেতা হিসাবে দেখতে। বিকাল সাড়ে ৫ টায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে চেয়ারপার্সন বেছে নেওয়া হবে। আমরা চাই রাহুল গান্ধীই দলকে নেতৃত্ব দিক।"
বিজেপি ফের সরকার গঠন করলেও সেটা যে জোটনির্ভর সেই কথা উল্লেখ করে মানিকম বলেন, "এই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বিজেপি। তাদের এখন সরকার গঠন করার জন্য চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমারের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এখন যা হচ্ছে সেদিকেই নজর রাখছে ইন্ডিয়া জোট। সঠিক সময় এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।" ফলে বিরোধী দলনেতা হওয়ার প্রস্তাব রাহুল গান্ধী গ্রহণ করেন কিনা এখন সকলের নজর সেদিকেই।
উল্লেখ্য, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন ভারতীয় রাজনীতিতে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ২৪০টি আসনে জয়লাভ করেও তুলনায় শিশু জেডি (ইইউ) ও টিডিপির সঙ্গে অস্বস্তির সমঝোতায় আসতে হয়েছে বিজেপিকে। অন্যদিকে, রক্তাল্পতা কাটলেও কংগ্রেস দিল্লির দাবি জানানোর মতো জায়গায় নেই। সেই কথা বুঝতে পেরেই ইন্ডিয়া জোট সরকার গড়ার পথে হাঁটেনি। বরং বিরোধী আসনে বসে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সংসদীয় ফ্রন্টে লাগাতার চাপ বজায় রাখাই তাদের উদ্দেশ্য। এই লড়াইয়ের মুখ হন রাহুল এটাই চাইছেন কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা বলে খবর।