সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৪ ঘণ্টা হয়েছে রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বা ‘ইয়াস’ (Cyclone Yaas)। টানা প্রায় দু’দিন নিজে কন্ট্রোলরুমে থেকে ক্ষয়ক্ষতি কতটা, তা দেখে বুঝে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তাই ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও খুব দ্রুত করে ফেলতে সক্ষম রাজ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেব দেখালেন, সবমিলিয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিপর্যয় কাটলেই সবচেয়ে দ্রুত উদ্ধারকাজ, ক্ষতিপূরণের কাজ শুরু হবে। সেইমতো ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বস্ত এলাকা সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে এবং ক্ষতিপূরণে কাজ শুরুর ব্লু-প্রিন্ট ছকতে শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন দপ্তরের সচিবদের থেকে ক্ষতির খতিয়ান নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১.১৬ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে। তার আর্থিক ক্ষতি প্রায় ২০০০ কোটি টাকা। এছাড়া ‘যশ’-এর আগে,পরে স্থানীয় স্তরে বিভিন্ন জায়গায় টর্নেডো তৈরি হওয়ায় প্রচুর বাড়ির ক্ষতি হয়েছে, ভেঙে গিয়েছে কাঁচাবাড়ি। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ক্ষতিপূরণের কাজ হবে, তার রূপরেখা স্থির করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে তৈরি করলেন টাস্ক ফোর্স। আপাতত রাজ্য সরকারের তরফে ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে এই কাজের জন্য। এই টাকা যাতে ঠিকমতো খরচ করা হয়, তা নিয়ে কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: কোভিড মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য, ‘যশ’ দুর্যোগেও ব্যাহত হয়নি টিকাকরণ]
‘যশ’-এর তাণ্ডব মোকাবিলায় রাজ্য ‘দুয়ারে সরকার’-এর আদলে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ বিলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কীভাবে ত্রাণ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে, তা বিস্তারিত জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩ থেকে ১৮ জুন ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবিরে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন নেওয়া হবে। এবার আর কারও মাধ্যমে নয়, যিনি ক্ষতিগ্রস্ত, তিনি সরাসরিই আবেদন জানাতে পারবেন। এরপর ১৯ থেকে ৩০ জুন – এই সময়ে আবেদনগুলি খতিয়ে দেখা হবে। তারপর ১ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তরা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই টাকা পাবেন।
[আরও পড়ুন: শুক্রবার বিধানসভায় শপথ নেবেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী-সহ ১২ জন বিধায়ক]
আসলে, গত বছর আমফানের পর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে শাসকদল তৃণমূলের তরফে বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তা এখনও কলকাতা হাই কোর্টে বিচারাধীন। এবার যাতে তেমন অভিযোগ না ওঠে, সেদিকটা খেয়াল রেখে ত্রাণ বণ্টনে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মুখ্যমন্ত্রীর এই পরিকল্পনা বলে মনে করা হচ্ছে।