অর্ণব আইচ: যে সব সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা হতো, সেসব সংস্থায় যোগ ছিল রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) মেয়ের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) আধিকারিকদের। সূত্রের খবর, জ্যোতিপ্রিয়র মেয়েকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এবং তিনি স্বীকার করেন যে তিনি যখন ডক্টরেট করছিলেন, সেই সময় ওই সংস্থাগুলির তৈরি নথি তিনি দেখেছিলেন। যদিও এর আগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছিলেন, ওইসব সংস্থার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই।
কীভাবে কালো টাকা সাদা করার কী ‘মন্ত্র’ ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের, তা ইডির কাছে ফাঁস করেছেন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের পরিচিত এক মিল মালিক। তাতেই উঠে আসে, এই কাজের জন্য তিনটি সংস্থা তৈরি করা হয়েছিল এবং মন্ত্রীর স্ত্রী, মেয়ে এমনকী পরিচারককেও ডিরেক্টর (Director) করে দেওয়া হয়েছিল। আর মন্ত্রীর পরামর্শে তা করিয়েছিলেন তাঁর আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাস। ইডির জেরায় অভিজিৎও সে কথাই বলেছিলেন। তিনি সমস্ত দায় চাপিয়েছিলেন মন্ত্রীর উপর।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধের বাজারেও স্বস্তি, ধনতেরাসের আগে সামান্য কমল সোনার দাম]
আর আদালতের সওয়াল-জবাবে মন্ত্রী নিজে দাবি করেছিলেন, এই তিনটি সংস্থার সঙ্গে তাঁর কোনওরকম যোগসূত্র নেই, তিনি এসব সম্পর্কে কিছু জানেন না। ইডি জানায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেন, সমস্ত কাজই করেছেন তাঁর আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাস। অভিজিৎই নাকি ওইসব সংস্থার নিয়ন্ত্রক ছিলেন এবং তিনিই জ্যোতিপ্রিয়র স্ত্রী, মেয়েকে জোর করে সেসবের ডিরেক্টর করেছিলেন। অথচ মন্ত্রীর মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে বয়ান হাতে এল তদন্তকারীদের, তা ভিন্ন। মেয়ে স্বীকার করেছেন, ওই সব সংস্থার নথি তিনি দেখেছেন। অর্থাৎ জ্যোতিপ্রিয় যে দাবি করেছিলেন, এসব সংস্থার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্কই ছিল না, তার উলটো কথাই শোনা গেল মেয়ের গলায়। এমনই দাবি ইডি আধিকারিকদের। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ১৩ তারিখ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে থাকবেন। জেরা করে তাঁর থেকে এ বিষয়ে আরও তথ্য হাতে পাওয়ার চেষ্টায় মরিয়া ইডি।