অভিরূপ দাস: রাজ্যে শুরু হতে চলেছে আকুপাংচারের (Acupuncture) ডিগ্রি কোর্স। যার মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। কেমন হবে সেই কোর্সের ব্লু প্রিন্ট? শনিবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার হাতে কোর্সের রূপরেখা তুলে দিয়েছে আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া। আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার যুগ্ম সম্পাদক ডা. হীরালাল সামন্ত জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দপ্তর সবুজ সংকেত দিলেই শুরু হবে ডিগ্রি কোর্স। অল ইন্ডিয়া নিট (NEET) পরীক্ষার মাধ্যমে যাতে ভরতি হওয়া যাবে।
শনিবার ছিল আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ১৯ তম জাতীয় সম্মেলন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (JU) সেই সম্মেলনে হাজির ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য সুরঞ্জন দাশ, আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি ডা. মৃগেন্দ্রনাথ গাঁতাইত, যুগ্ম সম্পাদক ডা. হীরালাল সামন্ত। কলকাতার অন্যতম প্রধান আকুপাংচার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ডা. বিকে বসু মেমোরিয়াল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট অফ আকুপাংচার।
রাজ্য সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের দুটি সেন্টার রয়েছে – নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ (NRS) আর কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে। যেখানে মাত্র আউটডোরে (OPD)চিকিৎসা চলে। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ডা. বি কে বসু মেমোরিয়াল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট অফ আকুপাংচারে প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ জন রোগী আসেন। হাসপাতালের ডিরেক্টর ডা. হীরালাল সামন্ত জানিয়েছেন, আকুপাংচারের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু অভাব রয়েছে মেডিক্যাল অফিসারের। এক সময় রাজ্যে আকুপাংচারের ১১ জন মেডিক্যাল অফিসার ছিল। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে চারজনে। নতুন অফিসার নিয়োগ না হওয়ায় একাধিক জেলায় আকুপাংচার চিকিৎসাকেন্দ্র চালানোই মুশকিল।
[আরও পড়ুন: ‘২৬/১১ মুম্বই হামলায় কেন্দ্রের চরম সিদ্ধান্তহীনতার নিদর্শন’, দাবি তৎকালীন শীর্ষ আমলার]
নার্ভের এই মুহূর্তে দু’ধরনের কোর্স রয়েছে আকুপাংচারের। সার্টিফিকেট কোর্স ফর ডক্টর। মডার্ন মেডিসিনের চিকিৎসকরাও সেই কোর্স করছেন। আকুপাংচার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এটা প্রমাণিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সায়াটিকার ব্যাথা সাড়াতে সক্ষম আকুপাংচার। আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার বঙ্গীয় শাখার সম্পাদক অসিত হালদার জানিয়েছেন, অফিসে একটানা চেয়ারে বসে কাজ করতে হয় অনেককেই। বসার ভুল ভঙ্গির জন্য কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। কোনও রকম পাশ্বর্প্রতিক্রিয়া ছাড়া সে ব্যাথা কমাতে পারে আকুপাংচার।
[আরও পড়ুন: ‘উচ্চ মাধ্যমিক পাশ, MBA ডিগ্রি ভুয়ো’, অভিষেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন শুভেন্দুর]
সার্টিফিকেট কোর্স ছাড়াও রয়েছে সাড়ে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স (Diploma Course)। এবার ডিগ্রি কোর্স চালু করার জন্য আবেদন করেছে আকুপাংচার অ্যাসোসিয়েশন। আকুপাংচারের তেত্রিশটা সেন্টার ছিল বাংলায়। মেডিক্যাল অফিসারের অভাবে এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে বাইশটিতে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও আকুপাংচার পড়ানো হতো একসময়। গত দু’বছর ধরে তা বন্ধ।