সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন আর আর এক বালক ব্রহ্মচারী। মৃত্যুর তিন বছর পরও অনুগামীদের ধারণা তাদের গুরুদেব বেঁচে আছেন। তিনি ধ্যানস্থ হয়েছেন। গোটাটাই তাঁর লীলা। শরীরে প্রাণ ফিরবে এই বিশ্বাসে আশুতোষ মহারাজের অনুগামীরা দেহ আগলে রেখেছেন। দেহ দাবি করে মহারাজের ছেলে অন্ত্যোষ্টিপ্রক্রিয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দীর্ঘ মামলা-মোকদ্দমার পর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট জানাল, মহারাজের দেহ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যাবে।
[রাম মন্দির নির্মাণে অযোধ্যায় পৌঁছল ট্রাকভর্তি পাথর]
ধর্মগুরুকে নিয়ে অন্ধবিশ্বাস এবং মিথ ভারতের নানা প্রান্তে এখনও বিদ্যমান। কোথাও ধর্মগুরুর বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে গেলে পুলিশকে মারধর করা হয়। কোথাও ধর্মগুরু প্রাণ হারালেও তাঁর অনুগামীরা বিশ্বাস করেন তিনি নাকি জীবিত। পুলিশ দেহ উদ্ধারে গেলে বাধা দেওয়া হয়। সচেতনতার অভাবের নজির এবার পাঞ্জাবের জলন্ধরে। আশুতোষ মহারাজ নামে এক ধর্মগুরু ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে মারা যান। যিনি দিব্যজ্যোতি সাংস্কৃতিক সংস্থানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মহারাজ প্রয়াত হলেও, তাঁর অনুগামীরা বিশ্বাস করেন তিনি মারা যেতে পারেন না। তার জন্য জলন্ধরের আশ্রমে দেহ আটকে রাখা হয়। দিলীপ ঝা নামে এক ব্যক্তি নিজেকে আশুতোষ মহারাজের ছেলে বলে দাবি করেছিলেন। তিনি অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন। পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে মামলা ঠোকেন। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে মামলা চলে। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর আদালত জানিয়েছে মহারাজের দেহ আশ্রমের মধ্যে সংরক্ষণ করা যাবে। ৪২ পাতার রায়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানায় দেহ সংরক্ষণ হলে মানুষের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হতে পারে। এমন বিতর্কের কোনও অর্থ নেই। এর ফলে আশুতোষের দেহ আশ্রমের মধ্যে ফ্রিজে রাখার আর সমস্যা থাকল না। আদালতের এই রায়ে উল্লসিত মহারাজের অনুগামীরা। আশ্রমের এক মুখপাত্রের দাবি, আশুতোষ মহারাজ মারা যাননি। আসল যোগ বিজ্ঞান বুঝতে পারছে না চিকিৎসা বিজ্ঞান। তার জন্য এই বিভ্রান্তি। একদিন মহারাজ ফের তাদের মধ্যে ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস আশুতোষ মহারাজের অনুগামীদের। তবে আদালতের এমন রায়ে হতাশ দিলীপ ঝা।
[বিয়ের আসরে এল না পাত্রী, ক্ষতিপূরণের দাবি পাত্রের]
দুনিয়ার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছেন আশুতোষ মহারাজের প্রায় ৪০ লক্ষ ভক্ত। জলন্ধরে প্রায় ১০০ একর জুড়ে রয়েছে তাঁর আশ্রম। যার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। মহারাজের অনুগামীদের অভিযোগ, সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে অন্ত্যেষ্টির দাবি করেছিলেন তাঁর স্বঘোষিত পুত্র দিলীপ ঝা।
The post ‘মৃত’ ধর্মগুরুর দেহ সংরক্ষণের অনুমতি আদালতের, জলন্ধরে বিতর্ক appeared first on Sangbad Pratidin.