shono
Advertisement

Breaking News

রাষ্ট্র মানুষকে কোথায় নামায়, খোঁজ মিলবে চলচ্চিত্র উৎসবে

বিশ্বরাজনীতি কেমন রেখেছে মানুষকে? The post রাষ্ট্র মানুষকে কোথায় নামায়, খোঁজ মিলবে চলচ্চিত্র উৎসবে appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:06 PM Nov 15, 2016Updated: 09:47 AM Nov 15, 2016

অনির্বাণ চৌধুরী: আমাদের, মানে এই তৃতীয় বিশ্বের মানুষদের একটা বদ্ধমূল ধারণা আছে। কী না, বিদেশের সব কিছুই ভাল! সেখানকার মানুষ থাকে বহাল তবিয়তে, জীবনে দুঃখ-কষ্ট প্রায় নেই বললেই চলে। তারা দিব্যি খায়-দায়, বিদেশি মুদ্রায় অঢেল উপার্জন করে, ঘুরতে-ফিরতে চুমুক দেয় মদের পেয়ালায়। এছাড়াও ফূর্তি জীবনে অন্তহীন। সেই ধারণা যে অনেকটাই অন্তঃসারহীন, তা বারে বারে প্রমাণ করে দিয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। কেন না, এই উৎসব চোখের সামনে তুলে ধরে এমন একগুচ্ছ বিদেশি ছবিকে যার থেকে সেই দেশগুলোর সমাজতাত্ত্বিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং রাষ্ট্রনৈতিক কাঠামোটি সুস্পষ্ট ভাবেই উঠে আসে। আজ, ২২তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের চতুর্থ দিনটি ফের সেই বিশ্বরাজনীতি এবং তার পাকেচক্রে অসহায় ভাবে জড়িয়ে যাওয়া মানুষদের কথা বলছে। তাদের কথা জানতে গেলে কোন কোন ছবি দেখতেই হবে টেক্সট হিসেবে?

Advertisement

আমেরিকা স্কোয়ার

সকাল ১১.৪৫-এ নন্দন ১ প্রেক্ষাগৃহে ‘আমেরিকা স্কোয়ার’ দিয়ে শুরু হোক বিদেশের আসল চেহারা চেনার পালা। পরিচালক ইয়ানিস সাকারিদিসের এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০৬ সালে। গ্রিসের এই ছবি বলছে নাকো নামের এক বর্ণবিদ্বেষী মানুষের কথা যার প্রতিবেশী বেশ কিছু উদ্বাস্তু। তার সঙ্গেই এই ছবিতে এসেছে এক তারেক নামের এক ডাক্তারের কথা যে তার মেয়েকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে চায়। আছে বিলি নামের এক ট্যাটু আর্টিস্টও যে ভালবাসে আফ্রিকান গায়িকা টেরেজাকে। এরাও চায় দেশ ছাড়তে। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্রের আসল চেহারাটি নাকোর দুরভসন্ধিতে এসে ধরা দেয়, আটকে যায় পালাবার পথ। তার পর কী ভাবে সবার দিন যায়, তার কয়েক ঝলক দেখে নিন নিচের এই ভিডিওয়।

দ্য উওম্যান হু লেফট্

এই ছবি যদি বড্ড জটিল এবং ভারাক্রান্ত মনে হয়, তবে লক্ষ্য হোক রবীন্দ্র সদনের সকাল ১০টার শো। সেখানে আজ দেখানো হবে ফিলিপাইনসের ছবি ‘দ্য উওম্যান হু লেফট্’। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে পরিচালক লাভ দিয়াজ বুনেছেন এক মহিলার কাহিনি যে উচ্চবিত্ত হয়েও রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা ও তার প্রহসনের শিকার। প্রেমিককে বাঁচাতে গিয়ে সে জেলে যায় এবং ৩০ বছর পরে বাড়িতে ফেরে। ফিরে হোরেশিয়া দেখে তার স্বামী চলে গিয়েছে পৃথিবী ছেড়ে। মেয়ে রয়েছে, কিন্তু ছেলের কোনও খোঁজ নেই! এরকম অবস্থায় যে কোনও মহিলারই কোণঠাসা হওয়ার কথা, কিন্তু হোরেশিয়া আবিষ্কার করে রাষ্ট্রের তৈরি করে দেওয়া সমাজব্যবস্থার আসল চেহারাটা। সেই সমাজে যার টাকা রয়েছে, তার কোনও অসুবিধাই হয় না। হোরেশিয়ার সেই সফরের কয়েক ঝলক দেখে নিন নিচের এই ভিডিওয়।

অ্যাওয়েটিং

বিকেল ৩টেয় গন্তব্য হোক ফের নন্দন ১ প্রেক্ষাগৃহ। সেখানে আপনার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে লিথুয়ানিয়ার ছবি ‘অ্যাওয়েটিং’। ২০১৫ সালের এই ছবিতে পরিচালক ড্যানিয়েলা ফেজারম্যান বলছেন এক দম্পতির কথা যারা এক পরিবার গড়ার জন্য লিথুয়ানিয়ায় আসে। সন্তান দত্তক নিতে চায়। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারে নাতালিয়া আর ড্যানিয়েল- রাষ্ট্র কখনও কখনও মানুষের খুব সামান্য এক ইচ্ছার পথেও কী ভাবে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই সমস্যা থেকে আদৌ বেরিয়ে আসতে পারে কি না তারা, জানতে চোখ রাখুন নিচের ভিডিওয়।


বিকেল ৫টার দিকে এসে আপনাকে দ্বিধায় পড়তে হবে। রাষ্ট্রের হাতে অসহায় মানুষ যেমন দ্বিধায় পড়ে, ঠিক তেমন করেই। কেন না এক দিকে নন্দন ১ প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হবে ইরানের ছবি ‘অ্যানাদার টাইম’। অন্য দিকে রবীন্দ্র সদনে রয়েছে পুয়ের্তো রিকের ছবি ‘ফ্র্যাগমেন্টস অফ লাভ’। কোনটা দেখবেন?

অ্যানাদার টাইম

২০১৬ সালের ইরানের ছবির পরিচালক নাহিদ হাসনানজাদে। বেশ কয়েকটা দিক থেকে এই ছবি রাষ্ট্র, সমাজ ও তার হাতে মানুষের অসহায়তার কথা বলছে। এই ছবির মুখ্য চরিত্র গাদির। এক বছর জেলে কাটিয়ে সে যখন বাড়ি ফেরে, তখন অকুল পাথারে পড়ে। কেন না, তার মেয়ে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে। রক্ষণশীল এক দেশে এখন বিবাহ-বহির্ভূত এই নাতনি এবং মেয়েটিকে নিয়ে গাদির কী করে? নিচের ভিডিও দেখাবে তার কয়েক ঝলক।

ফ্র্যাগমেন্টস অফ লাভ

অন্য দিকে ‘ফ্র্যাগমেন্টস অফ লাভ’ বেশ কয়েক দিক থেকে গা শিউরে ওঠার মতো উপাদান মজুত রেখেছে চিত্রনাট্যে। ২০১৬ সালের এই ছবিতে পরিচালক ফারনান্দো ভালেজো তুলে ধরেছেন এক তুমুল রাষ্ট্রনৈতিক অস্থিরতার কথা। সেই অস্থির সমাজে এবং সময়ে সুজানার অ্যাপার্টমেন্টে আশ্রয় নেয় রডরিগো। সুজানা রোজ রাতে রডরিগোকে তার পূর্বতন প্রেমিকদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের গল্প বলে এবং হুবহু সেভাবে মিলিত হতে চায়। রডরিগোর ব্যাপারটা ভাল লাগে না। তার কারণও অনেকটাই রাষ্ট্র ও সমাজনির্মিত পুরুষতান্ত্রিকতা। কিন্তু সে অসহায়, কেন না কোথাও যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সময় তাকে দিচ্ছে না। তার পর? দেখে নিন নিচের এই ভিডিওয়।

টোপ

সব শেষে নন্দন ১ প্রেক্ষাগৃহে পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘টোপ’ ছবিতে আবিষ্কার করুন সমাজ ও তার বাসিন্দাদের জটিল মনস্তত্ব। টোপ নামের নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ছোটগল্পকে সমসময়ে নিয়ে এসেছেন পরিচালক। দেখাতে চাইছেন নিজের প্রয়োজনে কাউকে ব্যবহার করা এবং অন্যের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হওয়ার রাষ্ট্র-সমাজের পুরনো খেলা। ছবিটি গায়ে কাঁটা জাগাবে।

The post রাষ্ট্র মানুষকে কোথায় নামায়, খোঁজ মিলবে চলচ্চিত্র উৎসবে appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement