সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসন্ন ১৫ আগস্টে রাজ্যের সব মাদ্রাসায় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার দাওয়াই দেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রতিটি জেলার সংখ্যালঘু কল্যাণ আধিকারিকদের চিঠি পাঠায় মাদ্রাসা শিক্ষা পরিষদ।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের জনপ্রিয় মুসলিম মৌলবি আসজাদ মিয়া পালটা ফতোয়া দিয়ে জানালেন, কোনও মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেন ১৫ আগস্ট জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা না হয়, এমনকী জাতীয় সঙ্গীতও না গাওয়া হয়। সরকারি নির্দেশের বিরোধিতা করে ওই মৌলবির ফতোয়া, স্বাধীনতা দিবসে কোনও অনুষ্ঠান করার বা ওই অনুষ্ঠান রেকর্ড করার দরকার নেই।
[অক্সিজেনের অভাবে শিশুমৃত্যু রুখতে রাতভর লড়াই এই ডাক্তারের]
মৌলবির এক মুখপাত্র নাসির কুরেশি বলছেন, ”আসজাদ মিঞা রাজ্যের সব মাদ্রাসাকে জানিয়ে দিতে চান, স্বাধীনতা দিবসে যেন ‘জন-গণ-মন’ না গাওয়া হয়। তার বদলে ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’ বা ‘বন্দে মাতরম’ গাওয়া যেতে পারে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কোনও দরকার নেই।” কিন্তু কেন এই ফতোয়া? মুখপাত্র জানাচ্ছেন, মিয়ার মতে জাতীয় সংগীতে এমন কিছু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যেখানে এক ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসে আঘাত লাগতে পারে। আরও বিস্তারিতভাবে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “জাতীয় সংগীতের শেষ ‘জয় হে’ বললে মনে হয় আল্লা ছাড়া অন্য কারও প্রশংসা করা হচ্ছে। তাঁকে তুলে ধরা হচ্ছে।”
ওই মৌলবির দাবি, জাতীয় সংগীতের বদলে উর্দুতে লেখা ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’ গাওয়া পড়ুয়াদের পক্ষে উপকারী। বিশিষ্ট কবি মহম্মদ ইকবাল এই দেশাত্মবোধক গানটি লিখেছেন। মৌলবির আরও দাবি, কানপুর, ঝাঁসি-সহ উত্তরপ্রদেশের এক হাজারেরও বেশি মাদ্রাসা তাঁর ফতোয়া মেনে নিয়েছে। সুন্নি মুসলিমরা যেন তাঁর কথা মেনে চলেন, কড়া ভাষায় জানিয়েছেন আসজাদ মিয়া। যে দরগায় তিনি নিযুক্ত রয়েছেন সেই দরগা একাই ৩০০-রও বেশি মাদ্রাসা পরিচালনা করে। উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৮০০০ মাদ্রাসা রয়েছে যার মধ্যে সরকার ৫৫০টি মাদ্রাসাকে আর্থিক সাহায্য করে। মৌলবির এই ফতোয়াকে অনেকেই সরকার বিরোধী বলে তোপ দেগেছেন। সমালোচকদের মধ্যে রয়েছেন সুন্নি মুসলিমরাও। সবমিলিয়ে যোগী আদিত্যনাথের নয়া নির্দেশকে ঘিরে রাজ্যের মুসলিম সমাজও যে দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়েছে, সেই চিত্রটাই এবার স্পষ্ট হল।
The post স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় সংগীত গাইবেন না, ফতোয়া মৌলবির appeared first on Sangbad Pratidin.