অর্ণব আইচ: একাধিক মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ‘চিকিৎসক’-এর। এক মহিলা ডাক্তারকে বিয়ে করার দিনই অন্য মহিলার অভিযোগে দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাট থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন ওই ‘চিকিৎসক’। যখন ওই মহিলা ডাক্তার বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই তিনি জানতে পারেন যে, তাঁর হবু স্বামী একাধিক মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেছেন। এর পর তিনি সতি্যই চিকিৎসক কি না, সেই নথি পুলিশ পরীক্ষা করে দেখছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম অভিজিৎ রায়। এক যুবতী কালীঘাট থানায় অভিযোগ করে জানান যে, এস পি মুখার্জি রোডে তিনি একটি পলিক্লিনিক রয়েছে। এখানেই ডাক্তারি করতে আসতেন অভিজিৎ। রোগী দেখার থেকে তাঁর সঙ্গেই বেশি গল্প করা পছন্দ করতেন। এর মধ্যেই তিনি ওই যুবতীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। কিছু জায়গায় তাঁকে নিয়ে যান অভিজিৎ। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েই তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন ওই ‘চিকিৎসক’। তারই জেরে যুবতী কালীঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে বুধবার দক্ষিণ কলকাতার বাড়ি থেকে অভিজিৎকে গ্রেপ্তার করে।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে নোবেলজয়ীরা কী বলছেন? এজলাসে বসেই প্রশ্ন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
এই গ্রেপ্তারির পরই তদন্তের মোড় ঘোরে। গ্রেপ্তারির খবর পেয়ে সটান থানায় এসে হাজির হন আরও এক যুবতী। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেন যে, ওই যুবক তাঁর হবু স্বামী। যুবতী কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থার কর্মী। তাঁর সঙ্গে বহুদিনের ঘনিষ্ঠতা ওই ডাক্তারের। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিজিৎ তাঁকে ধর্ষণ করেছেন বলে তিনি অভিযোগ জানান। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। একই ধরনের দু’টি ঘটনা জানার পর পুলিশ পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে হতবাক হয়ে যান। পরিবারের লোকেরা পুলিশকে জানান যে, এদিনই এক মহিলা ডাক্তারের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল অভিজিতের। বিয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছিল দু’টি পরিবারই। তার আগেই পর্দাফাঁস হয় ঘটনাটির।
প্রাথমিক জেরার মুখে ধৃত যুবক স্বীকার করে যে, মহিলা ডাক্তারকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কোনও ‘ভাবী স্ত্রী’ই জানতেন না যে, তাঁর ‘হবু স্বামী’ অন্য মহিলাকে একই কথা দিয়ে সহবাস করে চলেছেন। এদিন ধৃত অভিজিৎ রায়কে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। অন্য দুই মহিলা অভিযোগ জানালেও পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। আরও কোনও মহিলার সঙ্গে সে একই ধরনের আচরণ করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।