shono
Advertisement

Breaking News

ফাঁকা ফুটপাতে পড়ে থাকা শিশুকে রাতভর পাহারা কুকুরদের, একরত্তির প্রাণ বাঁচাল পুলিশ

কলকাতার মোগলি'র কাহিনী শুনে হতবাক সবাই। The post ফাঁকা ফুটপাতে পড়ে থাকা শিশুকে রাতভর পাহারা কুকুরদের, একরত্তির প্রাণ বাঁচাল পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:20 AM Apr 04, 2020Updated: 02:24 PM Apr 04, 2020

অর্ণব আইচ: সারারাত ফুটপাথের উপর একা একা রাত কাটিয়েছে চার বছরের শিশুটি। লকডাউনের ফাঁকা শহরে রাতভর ‘কলকাতার মোগলি’কে ঘিরে ছিল ‘কুকুর মায়েরা’। কারণ, একরত্তি ওই শিশুটা বুঝতেও পারেনি কখন চিরতরে তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে মা। আর এই অবস্থাতেও তার দিকে ফিরে তাকায়নি মদ্যপ বাবা। শেষে কালীঘাটের কয়েকজন বাসিন্দার সহযোগিতায় শিশুটির আশ্রয়ের ব্যবস্থা করল পুলিশ। শুক্রবার কালীঘাট থানার ওসি (OC) শান্তনু সিংহ বিশ্বাসের উদ্যোগে পুলিশ আধিকারিকরা শিশুটিকে তুলে দেন চাইল্ড লাইনের হাতে। বর্তমানে তাকে একটি হোমে রাখা হয়েছে।

Advertisement

ছোটবেলায় সূর্যকে ফুটপাথের উপর রেখে কাজে বেরিয়ে যেতেন মা। আর ছোট ছেলেটি সময় কাটাত তার ‘কুকুর মা’ আর ‘কুকুর বন্ধু’দের সঙ্গে। কেউ কিছু খাবার দিলে কুকুরদের সঙ্গেই ভাগ করে খেত। অনেক সময়ই তাকে দক্ষিণ কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের ধারে রাস্তার উপর কুকুরদের সঙ্গে শুয়েও থাকতে দেখা যেত। তাই ওই এলাকার বাসিন্দারা তার নাম দিয়েছিলেন ‘কলকাতার মোগলি’। মা সুমিত্রা সর্দার কয়েকটি দোকান আর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তাতেই জীবন চলত ফুটপাথবাসী মা আর ছেলের। ওই অবস্থার মধ্যে শিশুটিকে স্কুলেও ভরতি করেন তার মা। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সুমিত্রার মদ্যপ স্বামীর একাধিক বিয়ে। সে স্ত্রী ও ছেলের খোঁজও নিত না।

[আরও পড়ুন: ‘নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সভায় যোগদানকারীরা মানববোমা’, বিস্ফোরক কৈলাস ]

লকডাউন (Lock down) -এর ফলে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাতে কাজ প্রায় ছিলই না সুমিত্রার। খাবারও ভাল করে জুটছিল না। পুলিশের দেওয়া খাবারে পেট ভরানোর চেষ্টা করতেন। লকডাউনের পর একটি নাইট শেল্টারে মা ও ছেলেকে পাঠানো হয়। তবে দিনে থাকতেন ফুটপাথে। এর মধ্যেই হঠাৎ পেট খারাপ হয় বছর চল্লিশের ওই মহিলার। এর ফলে শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়। এর জেরে ফুটপাথের উপরই পড়ে ছিলেন তিনি। পরে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভরতি করেন। সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মহিলা। এদিকে তাঁর চার বছরের ছেলে রাতে অভুক্ত অবস্থায় ফুটপাথের এক পাশে শুয়ে ছিল মায়ের করে দেওয়া বিছানায়।

লকডাউনের ফলে রাস্তা খাঁ খাঁ করছে। দেখারও কেউ ছিল না। যে কুকুরগুলির সঙ্গে ছোটবেলা থেকে ‘কলকাতার মোগলি’ দিন কাটিয়েছে, সেই ‘কুকুর মায়েরা’ই ঘিরে ছিল তাকে। সকালে দোকানে বেরিয়ে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা তাকে এভাবে দেখতে পান। খবর নিয়ে জানতে পারেন যে মৃত্যু হয়েছে তার মায়ের। আর ছেলের দিকে তাকানোর সময় ছিল না বাবার। স্ত্রীর দেহ অন্ত্যেষ্টির কাজেই ব্যস্ত ছিল সে। তাই চার বছরের সূর্যকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কালীঘাটের ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা ময়ূরাক্ষী দাস। তিনি একটি থানা থেকে চাইল্ড লাইনের এক আধিকারিকের মোবাইল নম্বর জোগা়ড় করে তাতে যোগাযোগ করেন। এদিন সকালে তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকেরাই শিশুটিকে নিয়ে যান কালীঘাট থানায়। থানার ওসিকে পুরো বিষয়টি জানান। তারপর তাঁর উদ্যোগেই চাইল্ড লাইনের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়। সূর্যর মায়ের ইচ্ছা ছিল, ছেলে পড়াশোনা শিখে বড় হোক। হোমের আশ্রয়ে থেকে সূর্য মায়ের ইচ্ছাপূরণ করবে বলেই আশাবাদী পুলিশ।

[আরও পড়ুন: সল্টলেকে করোনা আক্রান্ত তিন, হাসপাতালের রিপোর্টে আশঙ্কায় করুণাময়ীর বাসিন্দারা]

The post ফাঁকা ফুটপাতে পড়ে থাকা শিশুকে রাতভর পাহারা কুকুরদের, একরত্তির প্রাণ বাঁচাল পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement