বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: প্রদেশ নেতৃত্বের উপর ভরসা করে দু-দু’বার লোকসভায় ডুবতে হয়েছে। তাই আর প্রদেশ নয়, চব্বিশের ভোটে রাজ্যস্তরে বিজেপি বিরোধী কোনও আঞ্চলিক দলের সঙ্গে হাত মেলাবে কংগ্রেস। এবার সিদ্ধান্ত নেবেন সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীরা। প্রদেশ নেতৃত্ব শুধুমাত্র প্রস্তাব দিতে পারবে। সব রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ও সভাপতিদের জানিয়ে দিলেন সোনিয়া।
ভোট পরবর্তী বিজেপি বিরোধী জোটের কথা ভেবেই হাইকমান্ডের এই সিদ্ধান্ত। সেক্ষেত্রে রাজ্যের অ-বিজেপি আঞ্চলিক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সখ্যতা রেখে চলতে হবে বলে উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে প্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। লোকসভা ভোটের আগে দু’বছর সময়। তার আগে সংগঠনকে মজবুত করতে কী কী করার প্রয়োজন প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে বলে এআইসিসি সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় বাংলার নিন্দা করে তৃণমূলের তোপের মুখে যোগী আদিত্যনাথ]
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তো নয়ই, তামিলনাড়ুর এম কে স্ট্যালিন, কর্ণাটকে দেবেগৌড়া পুত্র কুমারস্বামী, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব থেকে বিহারের লালুপ্রসাদ পুত্র তেজস্বী যাদব। বিজেপি বিরোধী নেতাদের না চটানোর জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। সেইসঙ্গে রাজ্যস্তরে জোটের ভবিষ্যতও এবার থেকে তাঁরাই ঠিক করবেন। যদি কোনও রাজ্য থেকে প্রস্তাব আসে তা ভেবে দেখা হবে বলে চিন্তন শিবিরে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এআইসিসি সূত্রে খবর।
তবে জোটের ক্ষেত্রে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, জগনমোহন রেড্ডি বা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে এর বাইরে রেখেছেন সোনিয়ারা। কারণ হিসাবে সূত্রের ব্যাখ্যা, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি ও কংগ্রেস বিরোধী জোট গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন বলে এআইসিসির কাছে খবর। সম্প্রতি তিনি ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন, জগনমোহন ও অখিলেশ যাদবের সঙ্গে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার দেখা করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়া ও তাঁর ছেলে কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সঙ্গেও। তাঁদের মধ্যে প্রায় তিনঘণ্টা বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চন্দ্রশেখর রাও জানান, আগামী উৎসবের মরশুমের মাঝেই ‘দশেরা’র দিন দেশে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হবে। আচমকাই তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর এহেন উদ্যোগ সুনজরে দেখছেন না সোনিয়ারা (Sonia Gandhi)।
আবার এখনই সাংগঠনিক নির্বাচন না হলেও আগামী মাসেই দলে বড়সড় রদবদল হতে পারে বলে বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দেন রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। সংগঠন ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে বাংলা-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের প্রদেশ সভাপতি বদলের ইঙ্গিত। দায়িত্বে থাকতে চান না বলে সোনিয়ার কাছে আবেদনও করেছেন কয়েকজন। লোকসভায় সংসদীয় দলের কাজের পাশাপাশি প্রদেশের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। ফলে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে সময় দিতে পারছেন না বলে সোনিয়াকে তাঁরা জানান বলে সূত্র মারফত খবর।