কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: বাইরে থেকে কল সেন্টার। কিন্তু আদতে আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্র। ইন্টারনেটে ফার্মেসি খুলে মাদক ট্যাবলেট বিদেশে পাচারের কাজ করা হত। ট্যাবলেটগুলির কয়েকটি ভারতীয় বাজারে ওষুধ হিসাবে বিক্রি হলেও বিদেশে নিষিদ্ধ মাদক হিসাবে চিহ্নিত। সেই ট্যাবলেট পাঁচ টাকায় কিনে আমেরিকাতে দশ ডলারে বিক্রি করত তিন যুবক। গত ছ’বছর ধরে কলসেন্টারের আড়ালে নিষিদ্ধ পাচার করে কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল তারা। অবশেষে ফাঁস হল কলসেন্টারের আড়ালে ইন্টারনেটে এই মাদক পাচারের ব্যবসা। চক্রের তিন পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো বা এনসিবি।
[সংগ্রামপুর বিষমদ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মূল পাণ্ডা খোঁড়া বাদশা-সহ ৪]
একেবারে শহরের বুকে নীরবে মাদক পাচারের কারবার চালাচ্ছিল অভিযুক্তেরা। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) সূত্রে খবর, যাদবপুর থানা এলাকার সাউথ সিটি মল সংলগ্ন এলাকায় ড্রিম অ্যাডভেন্ট সার্ভিসেস নামে কলসেন্টার চালাচ্ছিল ক্লেমেন্ট ফিলিস নামে এক ব্যক্তি। তার দুই সহযোগী গণেশ পান ও সুনীল আগরওয়াল। এনসিবি-র দাবি, বিদেশি হওয়ার সুবাদে অন্যান্য দেশে যোগাযোগ ছিল ক্লেমেন্টের। সেই যোগাযোগ কাজে লাগিয়েই নাইট্রাজেপাম, ট্রেমাডল, ক্লোনাজেপাম, লোরাজেপাম, অ্যাল্প্রাজোলাম-এর মতো ওষুধ পাচার করত সে। ইন্টারনেটে সে সব ওষুধের বিজ্ঞাপন দেওয়া হত। সুনীল এই ওষুধগুলি জোগাড় করত। আর গণেশ সেগুলি প্যাকিং-সহ অন্যান্য কাজ করত। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে সে সব ওষুধ পাঠিয়ে দেওয়া হত বিদেশে। বুধবার থেকে ওই কল সেন্টারের তল্লাশি শুরু করে এনসিবি। টানা ১৪ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। উদ্ধার হয় ছ’টি আলাদা ধরনের ৩১৬১টি ট্যাবলেট। এনসিবি কর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ক্লেমেন্ট এত সন্তর্পণে কাজটি করত যে ওই কল সেন্টারের বাকি সাতজন কর্মীর কেউই ঘুণাক্ষরেও বিষয়টি টের পাননি। এনসিবি সূত্রে খবর, দিনের বেলায় সেখানে কল সেন্টারের কাজই হত। রাতের অন্ধকার নামতেই সেই কল সেন্টার বদলে যেত ‘ড্রাগ কার্টেল’-এর ডেরায়। এনসিবি জানিয়েছে, এই ওষুধগুলি ভারতে প্রেসক্রিপশনের দেখেই বিক্রি হয়। কিন্তু এগুলি বিদেশে মাদক হিসাবে চিহ্নিত।
[ পলাতক শিল্পপতির সঙ্গে গোলানো হল বিজেপি নেতা রীতেশকে, নেটদুনিয়ায় ঝড়]
The post শহরে কল সেন্টারের আড়ালে মাদক পাচারচক্রের পর্দাফাঁস, গ্রেপ্তার ৩ appeared first on Sangbad Pratidin.