অর্ক দে, বর্ধমান: মণ্ডপে প্রতিমা পৌঁছে দিতে হাতে সময় আর সপ্তাহ দুয়েক। কুমোরপাড়ায় এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির বাজারে একদিকে যেমন মাটির দাম বেড়েছে। তেমন ভাবেই বিভিন্ন কারণে অমিল হয়ে পড়েছে ভালো মাটি। ফলে দুদিক থেকেই বিপাকে পড়েছেন মৃৎ শিল্পীরা। প্রতিমা তৈরির খরচ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। খরচ বাড়লেও পুজো উদ্যোক্তারা সেভাবে দাম দিতে চাইছেন না বলে জানিয়েছেন অনেকে। ফলে, প্রতিমা তৈরির বরাত কম মিলছে বর্ধমানের নামী কারিগরদের।
পূর্ব বর্ধমানে ডিভিসি ক্যানেল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। যে কারণে দামোদরের পাড় থেকে যে পলিমাটি পাওয়া যেত তা এবারে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বর্ধমানের মৃৎ শিল্পীদের গঙ্গা মাটির উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে। কিন্তু গঙ্গা মাটির দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। এছাড়াও এখন বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি চলছে। প্রতিমা শুকাতে কৃত্রিম পদ্ধতি ব্যবহার করতে হচ্ছে। সেই মেশিনের ভাড়া অতিরিক্ত খরচ হিসাবে কাঁধে ঝুলেছে।
বর্ধমানের শক্তিগড় থানার বাজেশালেপুর এলাকার মৃৎশিল্পী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন," গত বছর পর্যন্ত ৭০ থেকে ৭৫ টাকা বস্তায় গঙ্গামাটি পাওয়া যেত। সেই মাটির দাম বস্তা পিছু ১৬০ টাকা ছুঁয়েছে। এছাড়াও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিমার দামও বাড়াতে বাধ্য আমরা। তবে জিনিসপত্রের দামের অনুপাতে ঠাকুরের দাম দিচ্ছেন না পুজো কমিটির লোকেরা।"
বর্ধমান শহরের শ্যামলালপাড়ায় সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়, পিলখানা লেনের পূর্ণেন্দু দেরা জানান, 'বাঁশ, সুতলি দড়ি, পেরেকের দাম বেড়েছে অনেকটাই। বাঁশ প্রতি পিস ১০ টাকা, দড়ি কেজিতে ২০ টাকা, পেরেক কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে মাটির দাম। মাটি পেতেও সমস্যা হচ্ছে।'
কাঞ্চনগরের বলরাম পাল, খালবিলমাঠের সমীর পাল জানান, 'এইসব ছাড়াও সাজের দামও বেড়েছে। এটাও মৃৎ শিল্পীদের মাথাব্যাথার আরও একটা কারণ হয়েছে। তাই প্রতিমার দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে, যে পরিমাণ দাম বৃদ্ধি করতে হত, সেটা করা যায়নি। কারণ সেক্ষেত্রে পুজো উদ্যোক্তারা ছোট প্রতিমা কিনতে চাইবেন। তাই লাভ কম রেখেই কাজ করছেন তাঁরা।'