shono
Advertisement

নামমাত্র খরচে, সিকিমের গ্রামে

সব মিলিয়ে হাজার ছয়েকেই লেপচা-সংস্কৃতির আসল সিকিম দর্শন! ভিড়ে ঠাসা ট্যুরিস্ট স্পট নয়! The post নামমাত্র খরচে, সিকিমের গ্রামে appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 01:53 AM Nov 04, 2016Updated: 03:35 PM Jun 14, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নামমাত্র মানে নামমাত্রই! নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট, তারপর একটা শেয়ারের গাড়ি (ওটাও বেশি মনে হলে বাস তো রয়েছেই) ধরে গ্যাংটক! সেখান থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার পথ পেরোলেই যা যা আপনি চান, সব কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে জোংগু। সিকিমের একমাত্র গ্রাম যেখানে আজও বজায় রয়েছে লেপচা-সংস্কৃতির মূল নির্যাস।

Advertisement


প্রায় প্রতি সিজনেই আপনার পরিচিত কেউ না কেউ তো সিকিম যাচ্ছেনই! জোংগুর কথা কারও মুখে শুনেছেন? না শুনলে দোষের কিছু নেই! কেন না, যাঁরা আসল সিকিমকে চিনতে চান, তাঁরাই খুঁজেপেতে কড়া নাড়েন জোংগুর লেপচা-বাড়ির দরজায়। নিজের মতো করে খুঁজে নেন কুমারী প্রকৃতিকে। সঙ্গে আপসে এসে ধরা দেয় সিকিমের মূল সংস্কৃতি।
আসলে, গ্যাংটকে সিকিমকে খুঁজে পাওয়া দায়! সেখানে না আছে তেমন ঠান্ডা যা পাহাড়ে যাওয়ার আনন্দ দেয়! না আছে বিশুদ্ধ পাহাড়ি মানুষের সঙ্গ। নানা ভাষাভাষীর ভিড় মিলিয়ে গ্যাংটক আদতে সিকিমের নানা দিকে ঢোকার দরজা। তারই একটা দিক চলে গিয়েছে জোংগুর পথে। যেখানে রয়েছে সিকিমের আসল মজা!


সেই জন্যই জোংগু গ্রামে পৌঁছতে গেলে বিশেষ পারমিট লাগে। কেন না, লেপচারা আজও এই গ্রামে বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজেদের সংস্কৃতিকে। সব কিছুর থেকে আলাদা হয়ে রক্ষা করে চলেছেন সিকিমের আসল চেহারাকে। লেপচারাই তো সিকিমের মূল অধিবাসী। সেইজন্যই আপনি সিকিমের যেখানেই যান না কেন, জোংগু না ঘুরলে আসল সিকিম আপনার অধরাই থেকে যাবে।
উদার প্রকৃতি, সাতটি ঝরনা, পবিত্র এক হ্রদ, কাঞ্চনজঙ্ঘার আকাশছোঁওয়া রূপ, অরণ্যের মর্মরগাথা, লেপচাদের হাসিমুখ আর বিশুদ্ধ লেপচা কুইজিন- এই নিয়েই জোংগু। তাই গ্যাংটক পৌঁছে একটু সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ুন জোংগুর পথে। এসে ডেরা করুন কোনও এক হোম-স্টে। তার পর ঘুরে নিন লিংথেম। লিংথেমের খাড়া পাহাড়ি পথে অনেকটা উঁচুতে উঠে নতুন করে আবিষ্কার করুন কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। সেই সঙ্গে পাখির চোখে দেখে নিন গাছের সবুজ আর জলের নীলে ঘেরা জোংগুকে। ফিরে এসে ধোঁয়া-ওঠা লেপচা খাবারের স্বাদে ডুব দিন! তৃপ্ত হোক শরীর আর মন- দুটোই!

দ্বিতীয় দিনে একটু হাঁটাহাঁটি হলে মন্দ কী! ঢেউয়ে গান গেয়ে চলা দুরন্ত থোলুং চু নদীর উপরে ঝুলন্ত বাঁশের সাঁকো বেয়ে ঘুরে নিন থোলুং মনাস্ট্রি। স্নান সারুন উষ্ণ প্রস্রবণে। পথেই পড়বে লিংজ্যা ঝরনা। তাকেও একটু সময় দিয়ে এগিয়ে চলুন গন্তব্যের দিকে। একদিনে এটুকুই যথেষ্ট- কেন না জোংগু থেকে লিংজ্যা ঝরনা হয়ে থোলুং মঠে পৌঁছতে সময় লাগবে ঘণ্টা পাঁচেক! গাড়ি যাবে না, তাই পা দু’খানিই ভরসা!
তৃতীয় দিনে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে রওনা দিন কেশুয়াংয়ের পথে। ভাবছেন, বড্ড হাঁটাহাঁটি হচ্ছে পাহাড়ি পথে? হলে আপনার লাভই! কেন না, এই পথে আপনার জন্য অপেক্ষা করে আছে এক মনোরম হ্রদ। এতটাই স্বচ্ছ সেই হ্রদের জল যে তলা পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায়। সেই স্বচ্ছতা চোখে ভরে নিয়ে যদি চার দিকে তাকান, দেখবেন ফুলে ফুলে ছাওয়া অরণ্য স্বাগত জানাচ্ছে আপনাকে। একটুও ভয় না পেয়ে চার দিকে ঘুরপাক খাচ্ছে প্রজাপতি। পায়ের তলাতেও বিছিয়ে রয়েছে ফুলের নরম গালিচা। এরকম অনাবিল সৌন্দর্য সিকিমের ভিড়ে ঠাসা ট্যুরিস্ট স্পটে কোথায়?


চতুর্থ দিনটিতে একটু মনখারাপ হবে বইকি! তখন যে আপনাকে ডাক দিচ্ছে ঘরে ফেরার গান। কম খরচের ঘোরাঘুরিতে বেশি দিন কি আর পাওয়া যায়? তাও কি প্রত্যাশার চেয়ে মাত্র এই কয়েকদিনে প্রাপ্তির ভাঁড়ারটাই বেশি নয় জোংগু সফরে? অতএব, আবার সেই পুরনো পথ- জোংগু থেকে গ্যাংটক, গ্যাংটক থেকে নিউ জলপাইগুড়ি, সেখান থেকে নিজের বাড়ি! সব মিলিয়ে হাজার ছয়েকেই সারা বছরের ক্লান্তি থেকে মুক্তি!
কী ভাবে যাবেন: ট্রেন নিয়ে চলে আসুন নিউ জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়ায় একটা গোটা গাড়ি নিয়ে সরাসরি চলে আসতে পারেন জোংগু। বা গ্যাংটকের বজ্র স্ট্যান্ড থেকেও শেয়ারের গাড়িতে আসতে পারেন জোংগু। সেক্ষেত্রে ভাড়া কিছু কম পড়বে।


কোথায় থাকবেন: জোংগুর লেপচা গ্রামে থাকার বন্দোবস্ত কেবল দুই হোম-স্টে। মায়াল ল্যাং এবং মায়াল মালোক লি। যেটা পছন্দ, সেটা বেছে নিন।
কী খাবেন: আমাদের মতোই ভাত লেপচাদেরও প্রধান খাবার। সঙ্গে থাকবে জোংগু গ্রামের টাটকা সবজি। শুধু একটা ব্যাপার খেয়াল না রাখলেই নয়। লেপচারা খাবারে খুব কম তেল দেয়। তাই লেপচাদের বেশির ভাগ রান্নাই হয় সেদ্ধ, নয় তো ঝলসানো! কিন্তু, অতীব সুস্বাদুও! তাছাড়া, জোংগুতে যাওয়াই তো মূল সিকিমকে চিনে নেওয়ার জন্য! খাবারে তার ছোঁওয়া থাকলে তাই চিন্তা কী!

The post নামমাত্র খরচে, সিকিমের গ্রামে appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement