সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আরও চার রাজ্যের ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে কমিশন জানিয়ে দিল, অসম, কেরল, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে মার্চ ও এপ্রিল মাসেই নির্বাচন হবে।
[আরও পড়ুন: প্রভাব পড়বে মুদ্রাস্ফীতিতে, এবার পেট্রোপণ্যের শুল্ক কমানোর আরজি আরবিআই গভর্নরের]
এদিন কমিশন জানিয়েছে, অসমে ৩ দফায় ভোট হবে। প্রথম দফায় ২৭ মার্চ ৪৭টি আসনে ভোট হবে।দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ভোট হবে। তৃতীয় দফার ভোট হবে ৬ এপ্রিল। কেরলে ৬ এপ্রিল মাত্র একটি দফায় ভোট হবে। তামিলনাড়ুতেও ৬ এপ্রিল একটি মাত্র দফায় ভোট হবে। পুদুচেরিতে ৬ এপ্রিল এক দফায় নির্বাচন হবে। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য ভোট হবে ৮ দফায়।
দেশের পাঁচ রাজ্যে মোট ৮২৪টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ কোটি ৬৮ লক্ষ। ২ লক্ষ ৭০ হাজার পোলিং স্টেশনে ভোট দেওয়া যাবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, অসমের বর্তমান সরকারের মেয়াদ রয়েছে ৩১ মে পর্যন্ত। সেখানে মোট আসন সংখ্যা ১২৬টি। করোনা আবহে ওই রাজ্যে বুথ সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মহামারীর জন্য একটি পোলিং স্টেশনে সর্বোচ্চ ১ হাজার জন ভোটার থাকবেন। পর্যাপ্ত ভোটকর্মী ও বাহিনী মোতায়েন করা যাবে বলে মত কমিশনের। এদিকে, মোট ২৯৪টি বিধানসভা আসনের পশ্চিমবঙ্গেও বুথের সংখ্যা ৩১ শতাংশ বাড়িয়ে ১ লক্ষ ১ হাজার ৯১৬ করা হয়েছে। সেখানে বর্তমান সরকারের মেয়াদ হচ্ছে ৩০ মে পর্যন্ত। চিফ ইলেকশন কমিশনার সুনীল অরোরা জানিয়েছেন, তামিলনাড়ুতে মোট ২৩৪টি আসনে ভোট হবে। ওই রাজ্যে বর্তমান সরকারের মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত। কেরলে ১৪০টি আসনে হবে নির্বাচন। সেখানে বর্তমান সরকারের মেয়াদ ১ জুন পর্যন্ত। পুদুচেরিতে ৩০টি আসনে ভোট হবে।
বিহার মডেলে জোর দিয়ে এদিন চিফ ইলেকশন কমিশনার সুনীল অরোরা বলেন, “করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে নতুন আশার আলো দেখতে পেয়েছে দেশ। করোনা যোদ্ধাদের আমি সম্মান জানাই। গত বছর করোনার মধ্যেই একাধিক নির্বাচন হয়েছে। ভোটারদের স্বাস্থ্যরক্ষায় আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এহেন সংকট কালেও আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “৮০ বছরের বেশি বয়সের ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা রয়েছে। ভোটদানের সময় একঘন্টা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। করোনা কালে রাজনৈতিক দলগুলি রোড শো করতে পারবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে সর্বোচ্চ পাঁচজন থাকবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীর সঙ্গে ২ জনের বেশি সঙ্গী থাকতে পারবেন না। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সঙ্গেই কার্যকর হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী বিধি। একজন প্রার্থী প্রচারে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খরচ করতে পারবেন। সব রাজ্যে ফল ঘোষণা হবে ২ মে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাঁচ রাজ্যের ভোটের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ দখল করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কারণ, এবার বাংলা জয় করতে পারলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে সুফল পাবে বিজেপি। কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে মূল্যবৃদ্ধি পর্যন্ত একাধিক ইস্যুতে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশে ও পাঞ্জাবে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে গেরুয়া শিবির। ফলে বাংলার ৪৪টি লোকসভা আসন পকেটে পুরতে পারলে সেই ক্ষতি অনেকটাই সামলে ওঠা যাবে। তাই এবার বাংলায় বিশেষ নজর দিয়েছে বিজেপি।