সন্দীপ চক্রবর্তী: গতকাল নবান্নে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে সবজি বিক্রি নিয়ে কালোবাজারি রুখতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর নির্দেশের পরই রাস্তায় নামল পুলিশ। কালোবাজারি রোখার অভিযানে আজ সকাল থেকে যেমন বাজারে বাজারে হানা দিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের কর্তারা, তেমনই সবজি বোঝাই ট্রাকেও কড়া নজরদারি চালিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার নবান্নের কর্তারা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, কোনওভাবেই ফড়েদের দাপট মেনে নেওয়া হবে না। মূলত বুলবুল নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে অসাধু উপায়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সাত থেকে দশদিনের মধ্যে যাতে সাধারণ মানুষের নাগালে চলে আসে সবজির দাম, তা নিশ্চিত করতেই পথে নামানো হয়েছে পুলিশকে। নবান্ন সূত্রে খবর, জ্যোতি আলুর দাম কেজি প্রতি ১৫-১৬ টাকায় খুচরো বাজারে মিলবে, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তারা। পিঁয়াজের দাম যেন ৫৯-৬০ টাকার উপর না বাড়ে, তাও বলা হয়েছে। সুফল বাংলা স্টলে ৫৯ টাকা করেই দিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রয়োজনে এমন স্টলের সংখ্যা বাড়ানো হবে। মূলত মোবাইল স্টলের সংখ্যা বাড়ছে। স্টলগুলিতে সবজির জোগানও বাড়ানো হবে।
[আরও পড়ুন: নেটদুনিয়ায় বন্ধুত্বের হাতছানি দিয়ে যুবকের থেকে মোটা টাকা আদায়, পুলিশের জালে তরুণী]
মোটামুটিভাবে ফড়ের দাপট কমলেই যে দাম অনেকটা কমবে, তা নিশ্চিত। কৃষকরা যাতে যথাযথ দাম পান, রাজ্য সরকার সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে। তথ্য উঠে এসেছে, ভাঙড়ে ব্যাপক ফলন হয়েছে। সেখানের সবজি মাঝরাস্তায় চাঁদার দাপটের কারণে কলকাতা ও শহরতলিতে আসতে পারছে না। মজুতদার, আড়তদার ছাড়াও মধ্যস্বত্বভোগীদের জন্য দাম বাড়ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। নবান্নের কর্তারা তথ্য নিয়েছেন, এবার সবজির ফলন ভালো। ফলে বুলবুল আতঙ্কে রাজ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম এতটা হওয়া উচিত নয়। নতুন আলু বাজারে জানুয়ারির শুরুতেই আসবে। এছাড়াও হিমঘরে মজুত আলুতে আড়াই মাসের বেশি চলবে।
কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের শাখার অফিসাররা গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট, কাঁকুড়গাছি-সহ ছ’টি বাজারে হানা দেন। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে শহরের অন্তত সাত-আটটি বাজার বেছে নিচ্ছেন ওঁরা। প্রতিদিন এভাবে অভিযানে নামবেন। সোমবার থেকে অভিযান আরও বাড়ানো হবে। বাজারে ঘুরে আলু-পিঁয়াজের দাম শুনে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁদের। নবান্ন যে দামে বিক্রির নির্দেশিকা দিয়েছে, সেই দামেই বিক্রি করতে হবে, বিক্রেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ তাঁদের। তবে বহু বিক্রেতা সেই দামে বিক্রি করতে চাইছেন না। তর্কাতর্কি হয় উভয়পক্ষের মধ্যে।
[আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তকে ছেঁকা দিচ্ছে সবজি বাজার, দর নিয়ন্ত্রণে কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর]
কোনও বাঁধাকপি প্রতি কেজিতে চল্লিশ টাকার নিচে মিলছে না। ফুলকপি মাঝারি সাইজের ক্ষেত্রেও খুচরো বাজারে ৩০ টাকা দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। সুফল বাংলার স্টলেই পিঁয়াজ ৫৯ টাকা কেজি দরে হলেও বাইরে এই দাম ৮০ টাকার মতো। বেগুন ৩২ টাকা প্রতি কেজি। গাজরের দাম শীতের শুরুতেও ৯০ টাকার কম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আদা ১১৫-১২০ টাকা প্রতি কেজি। টমেটো ৪০ টাকা। ধনে পাতা ১৪০ টাকা। পালং শাক ৫০ টাকা। ফুলকপি বাজারে ২৫-৩০ টাকার নিচে নেই। জ্যোতি আলু ২০-২১ টাকার নিচে সাধারণত কলকাতা ও লাগোয়া বাজারে মিলছে না। এসব রুখতে সুফল বাংলা স্টল বাড়ানোর ভাবনাও রয়েছে সরকারের।
The post কালোবাজারি রুখতে বাজারে হানা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের, কড়া নজরে ফড়ের দল appeared first on Sangbad Pratidin.