পরপর ধারাবাহিকে সাফল্য পাচ্ছেন রাহুল মজুমদার (Rahul Mazumdar)। কেরিয়ারের এই পর্যায়ে কী বলছেন ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’ খ্যাত অভিনেতা, শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
স্টার জলসার ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর সুবাদে এই মুহূর্তে আপনার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। বিগত কয়েক বছরে একেবারে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন।
কিছুটা সুররিয়্যাল লাগে। আমার নিজেরই বিশ্বাস হয় না। আমি যখন স্ট্রাগল করছিলাম এক-দু’বছর তখন কোনওদিন ভাবিনি এসব ঘটতে পারে। প্রথম কাজ আমার ‘রংরুট’ বলে সিনেমা। একসময় জুনিয়র আর্টিস্টের কাজও করেছি। শুনতে হয়েছিল –‘তুমি কোনও স্টারের ছেলে নাকি যে তোমাকে হিরো বানাতে হবে!’ সেখান থেকে প্রথম ‘দেবী চৌধুরাণী’ করি। তারপর একটু একটু করে ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’, ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’। আর এখন ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’।
প্রথম দিকের কথা মনে পড়ে?
আজও মনে পড়ে প্রথম যখন মাচার শো করতে গিয়েছিলাম মেদিনীপুরে, অন্তত দশ-পনেরো হাজার লোক রাত দু’টোর সময় আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমি ব্ল্যাঙ্ক হয়ে গিয়েছিলাম। আমি এমনিতে বহির্মুখী কিন্তু সেদিন কিছু সময়ের জন্য ব্রেনটা ব্ল্যাঙ্ক হয়ে গিয়েছিল। আমি জীবনে কোনওদিন সত্যি ভাবিনি যে, অডিশন ক্র্যাক করতে পারব। এত লোক আমাকে ভালবাসবে! কারণ, হয়তো অডিশনে সুযোগ পেয়ে গেলাম, লোকে এত ভাল নাও বাসতে পারত। সবটাই দর্শকের ওপর। বলতে পারেন, আমি স্বপ্নই দেখছি (হাসি)।
‘শংকর’ চরিত্রে যে জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন, তা বোধহয় আগের কাজ ছাপিয়ে গিয়েছে?
একটার পর একটা আসতে আসতে এখন হাউসহোল্ড নেম হয়ে উঠেছি বা লোক চেনে। আর এখন যেটা ভাল লাগে চরিত্রের নামে নয়, রাহুল হিসাবে চেনে লোকে।
আগে সপ্তাহে পাঁচদিন ছিল ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’। এখন সেটাই সপ্তাহে সাতদিন। এটা তো উত্তরণ।
আগে স্টারের ওই নন-ফিকশনগুলো চলছিল, তখন পাঁচদিন হত। রাত সাড়ে নটা-দশটার স্লটে সাধারণত পাঁচ দিনের শো হয়। কিন্তু নন-ফিকশনগুলো বন্ধ হওয়াতে আমাদের শো সাতদিন হয়ে যায়। অনেক দর্শকই রিকোয়েস্ট করত, হয়তো সেই জিনিসটা মাথায় রেখেই সাতদিন হয়েছে। এখনও অবধি খুব ভাল টিআরপি।
[আরও পড়ুন: গুমরে থাকা সম্পর্কের চক্রব্যূহে অঞ্জন-মমতা ও যিশু-পাওলি, দেখুন ‘পালান’-এর টিজার]
সম্প্রতি আপনি টেলি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেলেন। যেখানে ‘সেরা ছেলে’র শিরোপা অর্জন করলেন। কেমন অনুভূতি?
প্রচণ্ড আনন্দ পেয়েছি। একটু লোভী হয়েই বলছি, কাজটা আরও ভাল করতে হবে যেন পরের বছরও পাই। আমি যখন ‘খুকুমণি’ করতাম, তখন সাবুদি (সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়) একদিন ফোন করে খুব প্রশংসা করেন। যেখানে আমি পাগলের চরিত্র করতাম। ওটা আমার বিরাট প্রাপ্তি। আমি গিয়ে পরে বলেছিলাম, আমি ভিডিও করে নিই। সারাজীবন এটা ভাঙিয়ে খেয়ে নেব (হাসি)।
সম্প্রতি ‘লাভ বিয়ে আজকাল’ এসেছে যিশু-নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তর প্রোডাকশন থেকেই। সেটায় কেন্দ্রে ওম সাহানি। সেক্ষেত্রে এবার কি ওমের সঙ্গে আপনার টক্কর?
না, না আমার ওরকম কিছু মনে হয় না। ওমদা কেন, কারও জন্যই এমন হয় না। হিংসে করার কনসেপ্টে আমি নেই। ভাগ্যে যেটা লেখা আছে, তার থেকে বেশি কেউ দিতে পারবে না, আবার ছিনিয়ে নিতেও পারবে না।
টেলিভিশন-ই করবেন, নাকি সিনেমা করার ইচ্ছে আছে? বা অফার পাচ্ছেন এবার?
অবশ্যই সিনেমা করার ইচ্ছে আছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা কনট্র্যাক্টে থাকি। আমার একটু সেলফিশ টাইপের ক্রাইটেরিয়া, যে লিডটা আমাকে হতে হবে (হাসি)।
পুজোর প্ল্যান কী?
৩২ বছরে আজ অবধি পুজোতে কখনও বাইরে যাইনি। পুজো মানেই পাড়ায় বসে আড্ডা মারা। প্রীতি মানে আমার স্ত্রী ঘুরতে খুব ভালবাসে। এইবার আমরা ভিয়েতনাম যাচ্ছি প্রথমবার। সময় হচ্ছেই না, ফলে বাড়িতে অশান্তি। কোথাও ঘুরতে যেতে পারে না।
কী বলেন তাঁরা?
বাবা-মা খুব গর্বিত আর খুশি আমাকে নিয়ে। চারটে সিরিয়াল মিলিয়ে ধরলেও, যদি এক-দেড় হাজার এপিসোড হয়, আমার বাবা একটাও মিস করেনি। বাবা-মা চিরদিন আমাকে সাপোর্ট করেছে। আর বলেছে, ‘যেটা করবি মন দিয়ে করবি। সে আলু, পটল বেচিস বা ক্রিকেট খেলিস।’ আমি প্রফেশনাল ক্রিকেট খেলেছি একসময়। যিশুদার হাউসের হয়েও সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ খেললাম এবার (হাসি)। কোথাও একটা ড্রিম রান চলছে, টাচ উড নজর না লাগে।
এখন কী লক্ষ্য?
একটু চাইছি বড় ব্যানারের সিনেমা যদি করা যায়। বা ওয়েব যদি করা যায়।