সুকুমার সরকার, ঢাকা: যতদিন যাচ্ছে, বাংলাদেশি অভিনেত্রী পরীমণির (Pori Moni Case) মাদক মামলা ততই জটিল হয়ে পড়ছে। তৃতীয় দফায় রিমান্ড শেষে আদালতে অভিনেত্রীকে তোলা হলে, তাঁকে ফের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম শুনানি শেষ হওয়ার পর এই নির্দেশ দেন। তৃতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পরীমণিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাজি গোলাম মোস্তফা তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।গত ১৯ আগস্ট পরীমণির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম। এর আগে গত ১৩ আগস্ট পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
গত ৪ আগস্ট প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাড়ি থেকে পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে এলিট ফোর্স র্যাব। এ সময় পরীমণির বাড়ি থেকে বিভিন্ন মদ-সহ নানা ধরণের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমণি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: পুলিশ কর্তার সঙ্গে পরীমণির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফাঁস, হইচই বাংলাদেশে]
এক সপ্তাহ আগেই আরও দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর আদালত থেকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত জনতার সামনে পরীমণি দাবি করেন, তাঁকে এই মামলায় ফাঁসানোয় হয়েছে। নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থেকেই চিৎকার করে পরীমণি বলতে থাকেন, ‘আমাকে কোনও কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’
অন্যদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল হয়েছে পরীমণি ও গুলশন বিভাগের এডিসি গোলাম সাকলায়েনের একটি ঘনিষ্ঠ ভিডিও। দু’জনকে ক্যামেরার সামনে চুমু খেতেও দেখা গিয়েছে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই আরও একদফা বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ভিডিওটি থেকে পরিষ্কার, মহম্মদ গোলাম সাকলায়েনের জন্মদিন পালন করছেন অভিনেত্রী পরীমণি। ঘরটি নীল-কালো বেলুন দিয়ে সাজানো। সাকলায়েনের সামনে রাখা রয়েছে নীল-কালো কেক। দু’জনকে হাত ধরে একসঙ্গে কেক কাটতে দেখা গিয়েছে। ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ গান গাইতে দেখা গিয়েছে ক্যামেরার পিছনের ব্যক্তিকে। বাংলাদেশের অভিনেত্রীর পরনে গোলাপি পাড়ের কালো রঙের স্বচ্ছ শাড়ি। কখনও কখনও গানের তালে তালে শরীর দোলাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তার পরেই দেখা গিয়েছে, সাকলায়েনের মুখে এক টুকরো কেক রেখে সেই কেকেই কামড় দিয়েছেন পরীমণি। তার পরে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে সাকলায়েনকে চুমু খেতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। এই ছবি থেকে তাঁদের প্রেমের সম্পর্কের স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে ভিডিওতে।
গত মাসে ঢাকার (Dhaka) অদূরে তুরাগতীরে বহুল আলোচিত বোট ক্লাব মামলার তদন্তের নেতৃত্বে ছিলেন পুলিশ আধিকারিক সাকলায়েন। ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা মামলার তদন্ত চলাকালীন নায়িকা পরীমণির সঙ্গে তাঁর সখ্য তৈরি হয়। দেশের এলিট ফোর্স র্যাবের হাতে পরীমণি গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। এরই মধ্যে পরীমণি-সাকলায়েনকে নিয়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV footage) ফাঁস হয়েছে। তাঁদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।