সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একসময়ে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে ছিল বামেদের দাপট। স্বাধীনতার পর থেকে এই কেন্দ্রে একছত্র প্রভাব ছিল বামপন্থীদের। বাংলায় নতুন শক্তি হিসেবে তৃণমূলের উত্থানের পরই বাম শিবিরের শক্তি ক্রমশ ক্ষয় হতে হতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে! অন্যদিকে ২০০৯-এর সালের পর শ্রীরামপুরে দক্ষিণপন্থী শক্তি বিজেপির রমরমারও বাড়বাড়ন্ত। বাংলা ‘রক্তশূন্য’ হওয়ার পাশাপাশি এখানকার লাল রংও ফিকে হয়েছে। গিয়েছে সেই রাজত্ব, রাজাও নেই! পরিত্যক্ত সেই সাম্রাজ্যেই আরেকবার লাল নিশান ওড়াতে আদা জল খেয়ে প্রচার চালাচ্ছেন বামপ্রার্থী দীপ্সিতা ধর (Dipsita Dhar)। তার হয়েই এবার প্রচারের ময়দানে দেখা গেল শ্রীলেখা মিত্রকে (Sreelekha Mitra)।
শ্রীলেখা বরাবরই বামপন্থী মনোভাবাপন্ন। একুশের বিধানসভা ভোটের সময়েও সিপিএমের হয়ে প্রচার করেছিলেন তিনি। আবার যে কোনও ইস্যুতে তৃণমূল কিংবা বিজেপিকেও বিঁধতে ছাড়েন না। সেই অভিনেত্রীকেই বুধবার ডানকুনিতে দেখা গেল বামপ্রার্থী দীপ্সিতা ধরের হয়ে প্রচার করতে। বিকেল থেকেই ডানকুনি এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে সিপিএমের হয়ে প্রচার করেছেন শ্রীলেখা। প্রার্থী দীপ্সিতা ধর তখন অন্য এলাকায় ব্যস্ত। কিন্তু যার জন্য প্রচারে কলকাতা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে যাওয়া, তাঁর সঙ্গেই কিনা বিনা সাক্ষাতে ফিরবেন? মন সায় দেয়নি শ্রীলেখা মিত্রর। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে অভিনেত্রী জানালেন, "খানিক অপেক্ষা করে দীপ্সিতার সঙ্গে দেখা করেই এলাম।" ঘণ্টাখানেক প্রচারের পর রাতের দিকে ঘেমে-নেয়ে হাসিমুখে ক্যামেরার জন্য পোজও দিলেন 'দুই কমরেড' শ্রীলেখা-দীপ্সিতা। সেই ছবি সোশাল মিডিয়াতেও শেয়ার করেছেন বামপন্থী অভিনেত্রী।
দিন কয়েক আগেই শ্রীরামপুরে দীপ্সিতার হয়ে ‘বাম রথে’ দেখা গিয়েছিল রাহুল অরুণোদয়, বাদশা মৈত্রদের। এবার শ্রীরামপুরে বামেদের ‘ফিকে ঝান্ডা’য় রং ফেরাতে প্রচারের মাঠে শ্রীলেখা মিত্র। সম্প্রতি বারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী তথা ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু-সহকর্মী দেবদূত ঘোষের হয়েও প্রচার করেছেন তিনি।
শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এই কেন্দ্রে সিপিএমের মুখ দীপ্সিতা ধর। তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মূল প্রতিপক্ষ। ২০০৯, ২০১৪, ২০১৯ সালে পর পর তিনবার শ্রীরামপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন কল্যাণ। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও তাঁকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বিদায়ী সাংসদকে হারানো যে দীপ্সিতার পক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জ, তা বলাই বাহুল্য। তাই তো কোমর বেঁধে প্রচারে ব্যস্ত। ফিকে হয়ে যাওয়া রঙেও আশার আলো দেখছেন তাঁরা।