অর্ণব আইচ: ভুয়ো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের (CA) পরিচয় দিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসায়ীদের কালো টাকা সাদা করার প্রলোভন দেখিয়ে কারবার চালাচ্ছিল। খাস কলকাতায় এমন বেআইনি কাজের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলা দায়ের করলেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নির্বাধেই নিজের কারবার চালাচ্ছিল গোবিন্দ আগরওয়াল নামে ওই ব্যক্তি। তবে শেষ রক্ষা হল না। ম্যাংগো লেন থেকে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) গোয়েন্দা বিভাগের হাতে গ্রেপ্তার হল গোবিন্দ। ব্যাংকশাল আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ২৪ তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। গরুপাচার কাণ্ডে সম্প্রতি সিবিআইয়ের (CBI) হাতে ধৃত এনামুলের সঙ্গে গোবিন্দর কোনও যোগ আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গোবিন্দ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় সেই ২০১৬ সালে। দীর্ঘদিন এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের অধীনে কাজ করার সুবাদে আর্থিক বহু বিষয় তার জানা ছিল। আয়কর হানা থেকে বাঁচানোর জন্য বড় বড় ব্যবসায়ীদের কালো টাকা সাদা করার টোপ দিত গোবিন্দ। এভাবেই এক নামী বেসরকারি সংস্থার মোটা অংকের টাকা সে নয়ছয় করে। বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সেসময় এক আয়কর কর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে নেমে গোয়েন্দাদের নজরে আসে গোবিন্দর নাম। ম্যাংগো লেনে বসেই এই কারবার চালাচ্ছিল সে। হেয়ার স্ট্রিট থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে। মোট ৬ বার তাকে হাজিরার জন্য তলব করা হলেও হাজিরা দেয়নি গোবিন্দ।
[আরও পড়ুন: বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মর্মান্তিক পরিণতি? একবালপুরে তরুণী খুনে গ্রেপ্তার দম্পতি]
গত ২০ অক্টোবরও তাকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু হাজিরা না দেওয়ায় এবার ম্যাংগো লেনের বাড়িতে হানা দিয়ে গোবিন্দ আগরওয়ালকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকরা। তার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা থাকায় এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, গরুপাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত এনামুলের সঙ্গে তার কোনও লেনদেন হয়েছিল কি না। আসলে এনামুলকাণ্ডে এমন কয়েকজন রাঘব বোয়ালের নাম উঠে এসেছে, গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রাক্তন বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমার, যার জেরেই গোবিন্দ-এনামুল যোগে বাড়তি নজর গোয়েন্দাদের।
[আরও পড়ুন: জোটের জট কাটানোই লক্ষ্য, বাংলার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাহুল]
এই গ্রেপ্তারি নিয়ে সকালেই টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজনৈতিক কারণে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে গ্রেপ্তার করেছে, একথা জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। কয়লা ও গরুপাচারে অভিযুক্তদের আড়াল করার মনোভাব মোটেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে মনে করেন তিনি।