সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাথরাসে সৎসঙ্গের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর কেটে গিয়েছে কয়েকটা দিন। এখনও শোকে পাথর নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। কেবলই শোক নয়, জমাট বেঁধেছে ক্রোধও! বহু মৃতের পরিবারের সদস্য রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসতে ফুঁসতে ভোলে বাবাকে 'ভণ্ড' বলে তোপ দাগছে। তাঁদের দাবি, দুর্ঘটনার পরে বাবার কমিটির তরফে কোনও খোঁজখবরই নেওয়া হয়নি। সাহায্য় তো দূরের কথা!
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল সৎসঙ্গে স্বজনহারাদের সঙ্গে। তাঁদেরই একজন নিহত মুন্নি দেবীর পুত্র সরাসরি ভোলে বাবাকে 'ভণ্ড' বলে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানাচ্ছেন, ''বাবার কমিটির থেকে কেউই খোঁজ নেয়নি। কিন্তু আমরা আশাও করিনি। ওদের কোনও মানবিকতা নেই। যদি সত্যিই সেটা থাকত, তাহলে বাবা এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করতেন। আমি ওকে ভগবান মানি না। আমি সৎসঙ্গে যাইও না।''
[আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বিধান পরিষদ নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের জয়জয়কার, চাপে বিরোধীরা]
আরেক নিহত আশা দেবী। তাঁর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ২ লক্ষ টাকা প্রশাসনের তরফে দেওয়া হলেও বাবার তরফে কেউই খোঁজ করেননি। অথচ ভোলে বাবার আইনজীবী বলেছিলেন, নিহত তো বটেই, আহতদের পরিবারকে সারা জীবনের জন্য সাহায্য করা হবে। এপ্রসঙ্গে আশা দেবীর বাড়ির এক সদস্য বলছেন, ''কেউ আসেনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে। তবে বাবা যদি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চান আমরা যাবই।'' প্রায়ই একই ধরনের মন্তব্য করেছেন আরও অনেকেই। ফলে ফুটে উঠেছে একটা সামগ্রিক ক্ষোভের ছবি। তবে সকলেই যে ভোলে বাবার উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন তা নয়। কিন্তু বাবার প্রতি ভক্তি যাঁদের রয়ে গিয়েছে, তাঁরাও বলছেন বাবার তরফে কিংবা তাঁর কমিটির তরফে যে যোগাযোগ করা হয়নি তা সত্যি।
প্রসঙ্গত, হাথরাসে (Hathras) সৎসঙ্গের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন খোদ উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। গোটা ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে যিনি সেই ভোলে বাবার বিরুদ্ধে এখনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ। যাঁরা এখনও ভক্তি বজায় রেখেছেন, তাঁদের মধ্যেও গাঢ় হচ্ছে অভিমান ও হতাশা। সেটাই ফুটে উঠছে সেদিনের ঘটনায় স্বজনহারাদের প্রতিক্রিয়ায়।