সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: গোবলয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প। শিশুকন্যা বাঁচাতে ও তাকে শিক্ষিত করতে যতই ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করুক কেন্দ্র, আদতে দেখা যাচ্ছে হচ্ছে তার উলটো। গোবলয় অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, চণ্ডীগড়, দিল্লিতে ক্রমশ কমছে পুত্রের তুলনায় কন্যার জন্মহার।
সম্প্রতি ওয়াইএসআর কংগ্রেসের লোকসভা সাংসদ এন রেড্ডেপ্পার প্রশ্নের জবাবে আঁতকে ওঠার মতো তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, রাজস্থানে ২০২০-’২১, ২০২১-’২২ ও ২০২২-’২৩ – এই তিন অর্থবর্ষে প্রতি হাজার শিশুপুত্রর তুলনায় শিশুকন্যার হার ছিল ৯৪৬। এর বাইরে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড ছাড়া গোবলয়ের বাকি ছ’টি রাজ্য ও দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২০২০-’২১ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে পুত্রের তুলনায় কন্যার জন্মহার কমেছে। দু’বছর আগে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে প্রতি হাজার শিশুপুত্রর তুলনায় শিশুকন্যার জন্মহার ছিল ৯৩২ ও ৯৪০। যা সামান্য বেড়ে গত অর্থবর্ষে হয়েছে ৯৩৬ ও ৯৪৪।
[আরও পড়ুন: আজ বৃষ্টি মাথায় করেই দেখতে হবে ডার্বি? আবহাওয়ার কী পূর্বাভাস দিল হাওয়া অফিস?]
দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড় ও দিল্লিতে ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে প্রতি হাজার শিশুপুত্রের তুলনায় শিশুকন্যার জন্মহার ছিল ৯৩৫ ও ৯২৭। যা বেশ কিছুটা কমে গতবারে হয় ৯০২ ও ৯১৬। হিমাচলপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা ও ছত্তিশগড়ে ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে এই হার ছিল যথাক্রমে ৯৪৪, ৯৩৯, ৯১৭, ৯৩৫, ৯২৭ ও ৯৬৫। যা কমে গত অর্থবর্ষে হয় যথাক্রমে ৯৩২, ৯৩২, ৮৯৫, ৯৩৪, ৯১৮, ৯৫৮। শিশুপুত্রের তুলনায় শিশুকন্যার জন্মহার সবথেকে বেশি কমেছে বিহারে (২২)। উলটোদিকে শুধুমাত্র লাদাখে প্রতি হাজার শিশুপুত্রের তুলনায় শিশুকন্যার সংখ্যা বেশি। ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে (৯৭৩)-এর তুলনায় অনেকখানি বেড়ে যা হয়েছে ১০২৩।
দিল্লির মসনদে বসবে কোন দল, তা ঠিক হয় কার্যত গোবলয় থেকেই। এখানকার ন’টি রাজ্য ও দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বসবাস দেশের সর্বাধিক জনতার। সেখানে শিশুপুত্রের তুলনায় শিশুকন্যার জন্মহার এভাবে কমে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা। এটি নিছকই কাকতালীয় ঘটনা? নাকি এখনও লিঙ্গবৈষম্যের অন্ধকারে আচ্ছন্ন গোবলয় বেআইনিভাবে জন্মের আগেই শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করে তা নষ্ট করে ফেলছে? উঠছে এই প্রশ্নও।