কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর তার জন্য ‘দায়ী’ বিজেপির রাজ্যে সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় FIR হল বিধাননগর দক্ষিণ থানায়। অভিযোগ দায়ের করলেন বিধাননগর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধাননগর পুর কো-অর্ডিনেটরের অভিযোগ, “ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে ২০ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আর এর জন্য দায়ী দিলীপ ঘোষের উসকানিমূলক মন্তব্য। তাই এই এফআইআর করা হল।” বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছে, বাংলায় এই ধরনের সংস্কৃতি ছিল না। দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর থেকেই এ ধরণের ঘটনা ঘটছে। তাঁর একের পর এক উসকানিমূলক মন্তব্যের জেরে মানুষের মধ্যে হিংসার মানসিকতা তৈরি করছে। তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের একজন সাধারণ শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে এই FIR করলাম। ভোটের সময় দিলীপ ঘোষের একের পর এক উসকানিমূলক মন্তব্য অত্যন্ত নিন্দাজনক। একের পর এক এই ধরনের মন্তব্যের জেরে ফলাফল পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ গিয়েছে ২০ জনের। এর দায় দিলীপ ঘোষের নেওয়া উচিৎ।”
[আরও পড়ুন: জামিন পেয়েই জনসংযোগে ‘টক টু কেএমসি’ ফিরহাদের, বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষার আশ্বাস]
এদিন বিধাননগর দক্ষিণ থানায় একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে হিংসায় প্ররোচনা, শান্তি বিঘ্নিত করা এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের হেনস্থার মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারাও রয়েছে।
উল্লেখ্য, ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ উঠছিল। কিন্তু শপথগ্রহণের পরই পরিস্থিতি দক্ষ হাতে সামাল দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিংসা বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করে প্রশাসন। এমনকী, দলমত নির্বিশেষে হিংসায় মৃতদের পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়ায় রাজ্য সরকার। সরকারি চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। রাজ্যের এই ভূমিকার প্রশংসা করে কলকাতা হাই কোর্টও। তবে রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে বিশেষ প্রতিনিধি দল পাঠায় কেন্দ্র। এমনকী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কাছেও রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এতদিন এই পরিস্থিতির জন্য তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলছিল বিজেপি। এবার ২০ জনের মৃত্যুর জন্য পালটা বিজেপির রাজ্য সভাপতির দিকেই আঙুল তোলা হল।