সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীরের পাকপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির (Syed Ali Shah Geelani) মৃতদেহ পাকিস্তানের পতাকায় মুড়ে দেওয়ার অভিযোগ। অজ্ঞাতপরিচয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করল পুলিশ। কাশ্মীর পুলিশ সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল কিছু ভিডিও-য় দেখা গিয়েছে, সমাধিস্থ করার আগে গিলানির মৃতদেহ ঢেকে দেওয়া হয় পাকিস্তানের পতাকা (Pakistan Flag) দিয়ে। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ৯১ বছর বয়সে মৃত্যু হয় কাশ্মীরের এই পাকপন্থী নেতার। তারপর থেকেই কাশ্মীরজুড়ে চাপা উত্তেজনার পরিবেশ বজায় ছিল। পরদিন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। শুক্রবার পর্যন্ত গোটা উত্তর কাশ্মীর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। মোতায়েন করা হয় বহু নিরাপত্তারক্ষী। উপত্যকাজুড়ে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গিলানির পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে জোর করে গিলানির দেহ কেড়ে নেয় পুলিশ। যদিও, সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কাশ্মীর পুলিশ। বরং, নিরাপত্তার বেষ্টনী গলিয়েও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গিলানির দেহের উপর পাকিস্তানের পতাকা মুড়ে দেয় বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশেও মোদিময় প্রচার! প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন থেকেই নয়া অভিযান বিজেপির]
দেশভাগের সময় ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে নব্বইয়ে উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদীদের রক্তপাত ও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের গণহত্যা-সহ বেশ কিছু অধ্যায়ের সাক্ষী ছিলেন সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। বারবারই পাকিস্তানের হয়ে কাজ করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অনেক ক্ষেত্রেই যে তা মিথ্যা নয়, সেকথা সর্বজনবিদিত। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে ‘হুরিয়ত কনফারেন্সে’র মধুচন্দ্রিমার কথাও নতুন কিছু নয়।
[আরও পড়ুন: বিচারপতি নিয়োগে তৎপরতা, কেন্দ্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধান বিচারপতি রামানা]
দীর্ঘদিন থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবন্দি ছিলেন গিলানি। ২০২০ সালে অভ্যন্তরীণ কলহের জেরে হুরিয়তের নেতৃত্বের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। কাশ্মীরবাসীর স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে হুরিয়তের কিছু নেতা আর্থিক তছরুপে মেতে রয়েছেন এবং শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন বলে সেই সময় অভিযোগ করেন তিনি। নয়ের দশক থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হুরিয়ত কনফারেন্সকে (Hurriyat Conference) নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছেন পাকপন্থী গিলানি। মৃত্যুর পরও তাঁকে নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত।