সুব্রত বিশ্বাস: বেলুড়ের চাঁদমারী ভাগাড়ে আগুন! রবিবার দুপুরে সেখানে সার কারখানার জমা করা জঞ্জালে আগুন লাগে। রাতভর চেষ্টা করেও সোমবার সকাল পর্যন্ত সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি দমকল বাহিনী। এদিন সকালেও দুটি ইঞ্জিন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে, আগুনের ধোঁয়ায় অতিষ্ট এলাকাবাসীর জীবন। সারারাত তাঁরা দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি।
এই ঘটনায় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সার কারখানাটি চালায় পি এস কনস্ট্রাকশন নামে একটি কোম্পানি। বালি পুরসভার জঞ্জাল থেকে সার তৈরি করে তারা। পাহাড় পরিমাণ জঞ্জালের প্লাস্টিক ও অন্য অব্যবহৃত সামগ্রীতে মাঝে মধ্যেই আগুন লাগিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকেই প্রত্যেকবার ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। অভিযোগ, দূষণ ও গরমে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর জীবন। মাঝে মধ্যে সেই আগুন এতটাই বড় আকার নেয় যে, দমকলের একাধিক ইঞ্জিনও সারাদিনে আগুন নেভাতে পারে না।
[আরও পড়ুন: ‘ওষুধের দাম বাড়ছে কেন?’, বৃদ্ধ ভোটারের প্রশ্নে মেজাজ হারালেন দিলীপ]
জানা গিয়েছে, রবিবারও ভাগাড়ে স্তূপ করা জঞ্জালে আগুন লেগে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার পরই এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করেন। ক্ষোভের আঁচ বাড়তে থাকায় হাওড়া উত্তরের এসিপি ও নিশ্চিন্দা থানার আইসি অনিরুদ্ধ চ্যাটার্জি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিশাল টিম নিয়ে সেখানে পৌঁছন। সারারাত দমকল ও পুলিশ কাজ করে। এই ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। ডোমজুড়ের দলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তাপস মাইতি ক্ষোভ উগরে বলেন, এই পরিস্থিতিতে মানুষ ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। সামনেই ভোট। কোনও মতে কাউকে রেয়াত করা হবে না। ডিএম, এসডিও, বালি পুরসভাকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার ডিএমের বৈঠক করার কথা রয়েছে। কেএমডিএ যে হারে বর্জ্য ফেলে, সেই পরিমাণ বর্জ্য কাজে লাগে না। ফলে স্তূপ হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে কারখানা উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে, প্রশাসনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষকে আর কষ্ট দেওয়া যাবে না।
এদিকে, প্রবল দাবদাহে জলকষ্টের শিকার বালি জগাছা ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতের অন্তত ৪০ হাজার পরিবার। অভিযোগ, পাইপ মেরামতির জন্য দীর্ঘদিন জল দিনে আসে না। গভীর রাতে মানুষজনকে লাইন দিয়ে জল নিতে হয়। হাঁসফাঁস গরমে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। আজ সোমবার থেকে মঙ্গলবার কোনওরকমভাবে জলবন্টন হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, গরমে জলের চাহিদা বাড়ায় জলের প্রেসার বাড়ানো হচ্ছে। ফলে পাইপের জয়েন্ট খুলে যাচ্ছে। পাইপ ফেটে যাচ্ছে। আজ কাজের জন্য দুপুর বারোটা থেকে জলবন্টন হবে না। তাড়াতাড়ি বিষয়টির সুরাহা হয়ে যাবে বলে তাঁরা আশা করেছেন।