সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন অন্য ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। সেই পুরনো লড়াকু ইস্টবেঙ্গল। তবে আফসোস দুবার এগিয়ে গিয়েও চলতি আইএসএলের (ISL 10) মেগা ডার্বিতে (Kolkata Derby) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের (Mohun Bagan) বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট মাঠে ফেলে এল লাল-হলুদ। অবশ্য ড্র হওয়ার জন্য নিজের ফুটবলারদের নয়। রেফারিং নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat)। রেফারিং নিয়ে যে তিনি একেবারে বিরক্ত সেটা ম্যাচের শেষে স্প্যানিশ কোচের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই বলে দিচ্ছিল।
ম্যাচের শেষে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে ক্লেটনদের হেডস্যর স্পষ্ট বলে দিলেন, "নন্দকুমারকে যেভাবে মেরেছিল সেটা একেবারেই অনৈতিক। রেফারির তো মোহনবাগানের ফুটবলারকে কার্ড দেখানো উচিত ছিল। সেই অবস্থা থেকে গোল করে চলে যায় পেত্রাতোস। বিপক্ষের ফুটবলার নন্দকে না মারলে খেলার ফলাফল আমাদের পক্ষেই যেত। খুবই খারাপ রেফারিংয়ের শিকার হলাম।"
এই গোল নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। গোলের জন্য পাস বাড়ানোর আগে সাহাল আবদুল সামাদের সঙ্গে নন্দকুমারের বলের লড়াই হয়। শেষে ট্যাকল করে বলটা জিতে যান সামাদ ও তিনি পাস বাড়ান পেত্রাতোসকে। তবে রিপ্লেতে দেখা যায় নন্দকুমারকে পিছন থেকে কিছুটা বাধা দিয়েছিলেন সাহাল, যার জন্য নন্দকুমার পড়ে যান। ম্যাচের মাঝে ইস্টবেঙ্গল প্লেয়াররা ফাউলের জন্য আবেদন করলেও রেফারি অবশ্য তা ফাউল দেননি। আর এই শট থেকেই গোল হয়। আর তাই ম্যাচের শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কুয়াদ্রাত।
আরও পড়ুন: এগিয়ে থেকেও পারল না ইস্টবেঙ্গল, পিছিয়ে পড়েও দারুণ কামব্যাক মোহনবাগানের, রুদ্ধশ্বাস মেগা ডার্বি ড্র
কুয়াদ্রাত ফের বলেন, "নন্দকুমারকে ফাউল করেছে সাহাল। কিন্তু রেফারি সেটা দেয়নি। যদি রেফারি ফাউল দিত সেক্ষেত্রে মোহনবাগান গোল করে সমতা ফেরাতে পারত না। ম্য়াচের ফল অন্যরকম হতে পারত।" সেই কুয়াদ্রাতকে দেখা যায় ডাগআউট থেকে বসে চিৎকার করছেন। রেফারির সিদ্ধান্তে তিনি যে অখুশি সেটা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
ভারতীয় ফুটবলে রেফারি নিয়ে অভিযোগ কম নয়। একাধিক ম্য়াচে সমর্থকরা খারাপ রেফারিং নিয়ে অভিযোগ করেছেন। এবার সেই তালিকায় যোগ হল সদ্য সমাপ্ত ডার্বির রেফারিং। তবে এই এই ম্য়াচে একাধিক ফাউল হয়, মোট ২২টা ফাউল হয় ম্যাচে।
রেফারির ঘাড়ে দোষ চাপালেও ক্লেটন সিলভা (Cleton Silva)-অজয় ছেত্রীদের (Ajay Chhetri) জন্য গর্বিত লাল-হলুদ কোচ। ম্যাচের তিন মিনিটেই খাতা খুলে দেন এই তরুণ। বাঁ প্রান্ত ধরে উঠে বক্সে বল বাড়ান নিশু কুমার। ডান পায়ের টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন অজয়। বাগানের ডিফেন্ডাররা দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। অজয় গোলের সামনে বল পেলেও, সেটা প্রতিরোধ করার তাগিদ সবুজ-মেরুন ডিফেন্ডারদের মধ্যে যায়নি। ফলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এরপর আর্মান্দো সাদিকু সমতা ফেরালেও, ক্লেটন গোল শোধ করেন। ৫৩ মিনিটে মহেশ নাওরেমকে মেরেছিলেন দীপক টাঙরি। পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। এর পর অনায়াসে গোল করে ফের লাল-হলুদ গ্যালারিতে মশাল জ্বালিয়ে দিলেন দলের অধিনায়ক।
আর তাই ফুটবলারদের লড়াকু মনোভাবের তারিফ করে কুয়াদ্রাত ফের যোগ করেন, "ক্লেটন কত বড় ফুটবলার সেটা বারবার বলে দেওয়ার দরকার নেই। তবে আমি অজয়কে নিয়ে খুবই খুশি। ডার্বির মতো হাইভোল্টেজ ম্যাচে ও যেভাবে পারফর্ম করল সেটা অনেকদিন সবাই মনে রাখবে।"