সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংবিধান সংশোধন থেকে বিরোধী দলগুলির অবস্থান। জিএসটি চালুর ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে নানা টানাপোড়েনের সাক্ষী দেশ। সব দলকে বুঝিয়ে জিএসটি গিঁট খোলার নেপথ্যে রয়েছেন এক আমলা। যাঁর দপ্তর গত ২ বছর বাড়তি খেটে পণ্য-পরিষেবা কর চালু করতে পেরেছে। নরেন্দ্র মোদির সেই বিশ্বস্ত সঙ্গীর নাম হাসমুখ হরিদাস আধিয়া। গুজরাট থেকে মোদির সঙ্গে তাঁর জুটি। রাজধানীতে যা আরও ক্ষুরধার। শুধু জিএসিটি নয়, যোগাকে জনপ্রিয় করতেও আধিয়ার হাতযশ রাজধানীতে অন্যতম আলোচনার বিষয়।
[ভোজপুরি সিনেমার দৃশ্যকে বাদুড়িয়ার ঘটনা বলে ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার এক]
মধ্যরাতে বেনজির ঘটনা। ৩০ জুন সংসদের সেন্ট্রাল হলে সূচনা হয়েছিল জিএসটির। দেশকে অভিন্ন করের আওতায় আনতে এই করব্যবস্থা চালু করার ক্ষেত্রে নানা অভিযোগ উঠেছিল। অনড় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, আমলাদের আমানুষিক পরিশ্রমের ফসল এই জিএসিটি। পণ্য-পরিষেবা কর চালুর ক্ষেত্রে কার্যত কৌটিল্যের ভূমিকায় ছিলেন রাজস্ব সচিব হাসমুখ হরিদাস আধিয়া। যাঁর দপ্তরের সক্রিয়তায় জিএসটি দিনের আলো দেখে। আধিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এই আস্থা এক দিনে হয়নি। রয়েছে গুজরাট যোগ। গুজরাটের রাজকোটে জন্ম আধিয়ার। ১৯৮১ সালে তিনি গুজরাট আইএএস ব্যাচের ক্যাডার। গুজরাটের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের সচিব হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। ভাল কাজের নিরিখে নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আধিয়াকে মুখ্যসচিবের পদে আনেন। মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দিল্লি গেলে পারফরম্যান্সের নিরিখে তাঁকে রাজধানীতে আনা হয়। গান্ধীনগরে লো প্রোফাইল অফিসার হিসাবে পরিচিত ছিলেন আধিয়া। ৫৮ বছরের আধিয়া গুজরাটে থাকাকালীন জিএসটি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ২০১৪-র নভেম্বরে ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের সচিব হিসাবে যোগ দেন। কয়েক মাস পর রাজস্ব দপ্তরের বাড়তি দায়িত্ব। জিএসটি চালু করার ক্ষেত্রে এই দপ্তরের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জিএসটি প্রয়োগে বিরোধী দলগুলিও ছিল বড় বাধা। কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজ্য থেকে বিরোধিতা এলেও, জট কাটানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন আধিয়া। কেন্দ্রের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ আমলা বলছেন, জিএসটির ক্ষেত্রে এমন একজনের দরকার ছিল, যিনি দড়ি টানাটানিটা ঠিকমতো চালাতে পারবেন। আধিয়া এই ভূমিকায় ১০০ শতাংশ সফল। সহকর্মীদের কাছে তিনি খুব ভাল বস। সবাইকে নিয়ে চলতে পারেন। তার জন্যই রাজস্ব দপ্তরের কর্মীরা ওভারটাইম করেছেন। গত ২ বছর তাঁরা কার্যত নিঃশ্বাস ফেলার সময় পাননি।
[এবার GST ধাঁধার সমাধানে হাজির মোবাইল অ্যাপ]
রাজধানীর আমলা মহলে বলা হয় আধিয়া কর্মনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেন না। সহকর্মীদের স্বাধীনতা কতটা দিতে হয় তাও জানেন আধিয়া। শ্রীনগরে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে দপ্তরের আধিকারিকদের স্ত্রীদের আনতে বলেছিলেন। কাশ্মীরের বৈঠকের সিদ্ধান্তও তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। শ্রীনগরে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে তিনি এই বার্তা দিতে চেয়েছিলেন গোটা দেশ এই শহরের সঙ্গে ইতিহাসে নাম লেখাতে চায়। সূত্রের খবর, তাঁকে এবার ক্যাবিনেট সচিব করা হবে। শুধু জিএসটি গিঁট খোলা নয়, যোগা নিয়ে মোদির বাড়তি আগ্রহের কারণও এই আধিয়া। গুজরাটে থাকার সময় তিনি ছিলেন মোদির যোগা শিক্ষক। এবার সেই শিক্ষক-ছাত্রের বোঝাপড়ায় দেশে অভিন্ন কর ব্যবস্থার সাক্ষী থাকল।
The post জানেন, কার হাত ধরে জিএসটি গাঁট খুলতে পারল কেন্দ্র? appeared first on Sangbad Pratidin.