অভিরূপ দাস: গাছ কাটা নিয়েও এবার টানাপোড়েন শুরু হল কলকাতা পুরসভা (KMC) আর রাজভবনের মধ্যে। যে গাছ নিয়ে এই বিতর্ক বালিগঞ্জে আশি বছরের পুরনো সেই অশ্বথ গাছ কাটা পড়েছে রবিবার। সোমবার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডে ওই গাছ কাটার খবর পাওয়ার পরেই মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) নির্দেশে ঘটনাস্থলে যায় পুরসভার উদ্যান বিভাগের আধিকারিকরা। বিনা অনুমতিতে যাঁরা গাছ কেটেছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে আচমকাই ঘটনাস্থলে চলে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। বলেন, কেটে ফেলা ওই অশ্বথ গাছের স্মৃতিতে আরও একশোটা গাছ লাগাবেন তিনি। কোনওটার নাম দেবেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কোনওটার মাতঙ্গিনী হাজরার নামে। পুরসভা ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও আচমকা ঘটনাস্থলে রাজ্যপালের যাওয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
[আরও পড়ুন: ‘জঙ্গিদের স্বর্গ’ হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান, অচিরেই খণ্ড খণ্ড হতে পারে ‘কাবুলিওয়ালার দেশ’!]
সাধারণত শহরে বিনা অনুমতিতে গাছ কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় রাজ্য সরকারের বন দপ্তর অথবা শহরের নগর নিগম। এদিন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার (Debasish Kumar) জানিয়েছেন, ‘‘বালিগঞ্জের ওই গাছ কাটার ঘটনায় যা যা ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ তা করেছি।’’ রাজ্যপাল প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সক্রিয় হতে হতে রাজ্যপাল এমন জায়গায় চলে গিয়েছেন, কাল পকেটমারির খবর পেলে সেখানেও দৌড়ে যাবেন।’’
[আরও পড়ুন: কমল খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার, দাম কমবে নিত্যপণ্যের?]
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার বিকেলে। বালিগঞ্জের রোল্যান্ড রো এলাকায় নিজেদের পুরসভার কর্মী বলে দাবি করে কিছু শ্রমিক পুরনো একটা অশ্বথ গাছ কেটে ফেলে। পাশের আরও একটি গাছ কাটতে গেলেই বাধা দেন স্থানীয়রা। তারা পুরসভার পরিচয় পত্র দেখতে চান। বাঁধা পেয়ে চম্পট দেয় ওই শ্রমিকরা। সোমবার বিকেলেই যারা ওই গাছ কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে কলকাতা পুরসভা। এদিকে মঙ্গলবারই সেখানে পৌঁছে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শহরে ‘মডেল ফরেস্ট’ তৈরি করতে হবে।’’ গাছ বাঁচাতে শহরের সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, ‘‘গাছ বাঁচাতে হলে রাজ্য সরকার, পুরসভা, বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।’’
আশি বছরের পুরনো ওই অশ্বথ গাছের মৃত্যুতে শোকার্ত রাজ্যপাল। শুরু করছেন পিপল (অশ্বথ) চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতা। রাজভবনের বাগানে একশোটা অশ্বথ গাছ লাগানোর কথা দিয়েছেন তিনি। এ প্রতিযোগিতা প্রতীকী। ওই গাছগুলোর নাম দেওয়া হবে সুভাষচন্দ্র বসু, মাতঙ্গিনী হাজরার নামে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ওই গাছ বাংলার কৃতীদের স্মৃতিতে।