সংবাদ প্রতিদিন ডিজটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ এড়াতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। কিন্তু এই লকডাউন অন্য বিপদ ডেকে এনেছে। দেশজুড়ে লকডাউন হওয়ার পর থেকে বেড়েছে গার্হস্থ্য হিংসা। শুধু মহিলারাই নয়, হিংসার শিকার হচ্ছে বাড়ির ছোটরাও। প্রধানমন্ত্রী যে হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছিলেন, সেখানে গত ১১ দিনে ৯২ হাজারেরও বেশি SOS ফোন কল এসেছে। এই পরিসংখ্যানে নতুন করে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে কেন্দ্র সরকারকে।
চাইল্ডলাইন ইন্ডিয়ার ডেপুটি ডিরেক্টটর হারলিন ওয়ালিয়া জানিয়েছেন, গত ২০ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ৩.০৭ লক্ষ ফোন এসেছে ‘CHILDLINE 1098’ হেল্পলাইনে। গোটা দেশ থেকে এই ফোনগুলি এসেছে। লকডাউনের প্রথম সপ্তাহে ৩০ শতাংশ ফোনকল এসেছিল শিশুদের গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে। তাদের উদ্ধার করার জন্য অনেকেই ফোন করেছিলেন হেল্পলাইন নম্বরে। ওয়ালিয়া আরও জানিয়েছেন, শিশুদের উপর অত্যাচারের খবর জানানোর জন্য বা তাদের উদ্ধার করার জন্য লকডাউনের আগেও অনেক ফোন আসত। কিন্তু ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর থেকে তার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
[ আরও পড়ুন: করোনার ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত, দিল্লিতে নতুন করে সিল করা হল ১৩ এলাকা ]
মঙ্গলবার একটি ওয়ার্কশপে এই পরিসংখ্যান শেয়ার করা হয়। শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে হওয়া জেলাভিত্তিক সেই ওয়ার্কশপে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের কর্মকর্তারা। ওয়ার্কশপে মূলত করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া লকডাউনের মধ্যে শিশুদের মানসিক অবসাদ কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়েও কথাবার্তা হয়। তখনই এই পরিসংখ্যান সামনে আসে। বৈঠকে হারলিন ওয়ালিয়া বলেন, গার্হস্থ্য হিংসা ছাড়াও য়ে হেল্পলাইন নম্বরে কোনও ফোন আসেনি, এমন নয়। স্বাস্থ্য, শিশুশ্রম ইত্যাদি নিয়েও ফোন এসেছিল। কিন্তু তার পরিমাণ ছিল অত্যন্ত কম। শারীরিক সমস্যা নিয়ে ১১ শতাংশ, শিশুশ্রম নিয়ে ৮ শতাংশ ও শিশুদের হারিয়ে বা পালিয়ে যাওয়া নিয়ে ৮ শতাংশ ও গৃহহীন শিশুদের নিয়ে ৫ শতাংশ ফোন এসেছিল। এছাড়া ১ হাজার ৬৭৭টি ফোন এসেছিল করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য।
লকডাউনে শিশুদের মতো গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছেন মহিলারাও। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানিয়েছেন, লকডাউনের পর থেকে মহিলাদের অভিযোগ কমিশনে আসছে অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। ২৪ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত ২৫৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৬৯টি অভিযোগই গার্হস্থ্য হিংসার। অবশ্য এর পিছনে যুক্তিও খাড়া করেছে কমিশন। জানিয়েছে, পারিবারিক হিংসার শিকার হলে মহিলারা অভিযোগ করতে পারে না এই ভেবে যে সমাজ কী বলবে। তার শ্বশুরবাড়ির লোক বা স্বামী আরও বেশি অত্যাচার করবে। অন্য সময় তারা বাপের বাড়ি চলে যেতে পারে। কিন্তু লকডাউনের সময় সেই সুযোগ নেই। ফলে কমিশনে অভিযোগ জমা পড়ছে বেশি।
[ আরও পড়ুন: ‘কঠিন সময়েই কাছে আসে বন্ধুরা’, ট্রাম্পকে সৌহার্দ্যের বার্তা মোদির ]
The post ১১ দিনে নব্বই হাজারেরও বেশি ফোন এল হেল্পলাইনে, লকডাউনে বাড়ছে গার্হস্থ্য হিংসা appeared first on Sangbad Pratidin.